ফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার জানুন

ফুসফুস শ্বসন তন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে অনেক সময় ফুসফুস নানা ভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হয়। বায়ু দূষণ এবং বিভিন্ন প্রকার ভাসামান কণা এবং রাসায়নিকের কারণে ও ফুসফুস অসুস্থ হতে পারে। তাই জানুন ফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার।
ফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার
অনেক সময় অবহেলা ও অসাবধানতার কারণে ফুসফুসে নানা জটিল রোগ দেখা দেয় এবং সংক্রমণ ঘটে। বর্তমানে ফুসফুসের অত্যান্ত মারাত্মক রোগ হচ্ছে ফুসফুসে ক্যান্সার। যার কারণে অধিকাংশ পুরুষ এই রোগের কারণে মৃত্যু কোলে ডোলে পড়ে। চলুন এখন আমরা শুরু করি ফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা।

‎পোস্টের সূচিপত্রঃফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার

ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

কারণঃ‎ক্যান্সার একাটি ভয়ানক রোগ যা মানুষ কে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। আজকে আমরা ফুসফুসে ক্যান্সার নিয়ে আলোচনা করবো। ফুসফুসে ক্যান্সারের মূন কারণ হচ্ছে ধূমপান করা। ধূমপান করলে সিগারেটের ধোঁয়া মানুষের লিভার কে ভিতর থেকে নষ্ট করে দেয়। আবার বিভিন্ন শিল্প কারখানার ধোঁয়া শ্বাস নালি দিয়ে শরীরের বিতরে ডুকে। যার কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়।

প্রতিকারঃফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার কারণে খুসখুসে কাশি, বুকে ব্যাথা, ঘনঘন জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করলে সুস্থ হয়ে যাওয়া যায়। আবার লক্ষণ দেখার পর রোগ পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রোয়জনে বিভিন্ন থেরাপি দিতে হবে। আবার ক্যান্সারের কোষ গুলোকে একেবারে ধ্বংস করে দিতে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে।

ফুসফুস বলতে কি বুঝায়

‎ফুসফুস দুটি ভাগে বিভক্ত । এটি স্পঞ্জের নরম এবং কোমল হালকা লালচে রঙের হয়। ডান ফুসফুস তিন খন্ডে এবং বাম ফুসফুস দুই খন্ডে বিভক্ত। ফুসফুস দুই ভাঁজ বিশিষ্ট প্লুরা নামক পর্দা দিয়ে আবৃত। এটি দুই ভাঁজে থাকে । ফলে শ্বাসক্রিয়া চলার সময় ফুসফুসের সাথে বক্ষ গাত্রের কোনো ঘর্ষন হয় না। ফুসফুস অসংখ্য বায়ুথলী বা বায়ুকোষ , সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম শ্বাসনালি বা রক্ত নালি থাকে । বায়ুথলী গুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুক্লোম শাখা প্রান্তে মৌচাকের মতো অবস্থিত। নাসাপথ দিয়ে বায়ু সরাসরি বায়ুথলিতে যাতায়াত করতে পারে।বায়ুথলি পাতলা আবরণী দিয়ে আবৃত । বায়ু প্রবেশ করলে এগুলো বেলুনের মতো ফুলে ওঠে এবং পরে আপনা - আপনি সংকুচিত হয়ে যায়। বায়ুথলী ও কৈশিক নালিকার গাত্র এত পাতলা যে এর ভিতর দিয়ে গ্যাসীয় আদান - প্রদান ঘটে ।

ফুসফুসে ক্যান্সারের কারণ

‎ উপরের আলোচনার দিষ্টিতে আমরা দেখতে পাই যে ফুসফুস আমাদের শরীরের ভিতরে কি ভাবে কাজ করে এবং কি ভাবে আমাদের শ্বাসতন্ত্রকে নিয়র্ন্তন করে । এই গুরুর্তপূর্ণ অঙ্গ তে এমন কিছু রোগ থাকে যা মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় । সেরকম একটা হলো ফুসফুস ক্যান্সার । এখন আমরা ফুসফুস ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে আলোচনা করবো । সব ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি । আমাদের দেশে পুরুষের ক্যান্সার জনিত রোগে মৃত্যুর কারণ হচ্ছে ফুসফুস ক্যান্সার । যক্ষ্মা বা কোনো নিউমোনিয়া ফুসফুসে এক ধরনের ক্ষত সৃষ্টি করে যা পরবর্তী তে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়। ‎
ফুসফুস ক্যান্সারের অন্যতম কারণ ধূমপান । বর্তমানে বাংলাদেশর প্রায় অধিকাংশ লোকেই ধূমপান করে থাকে। ধূমপানের কারণে সিগারেট এর ধোঁয়া শ্বাস নালি দিয়ে শরীরের বিতরে প্রবেশ করে । এতে ফুসফুসে ক্যান্সার হয় । বায়ু ও পরিবেশ দূষণ এবং বাসস্থান অথবা কর্ম ক্ষেত্রে ঘটতে পারে এমন সব বস্তুর আসে পাশে থাকলেও ফুসফুসে ক্যান্সার হয়ে থাকে । যেমনঃ– এ্যাসবেস্টাস, আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, নিকেল, কঠিন ধাতুর গুঁড়া ইত্যাদি। এ সকল বস্তু সংস্পর্শে আসার কারণে ও ফুসফুসে ক্যান্সার হয়।

ফুসফুস ক্যান্সার লক্ষণ

‎ফুসফুসে ক্যান্সারের নানা ধরনের লক্ষণ থেকে থাকে । তার মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ গুলো যত দ্রুত তার সাথে নির্ণয় করা যায় ।এবং চিকিৎসা প্রধান করা যায় , তত বেশি দিন বেঁচে থাকার সম্ভবনা বেশি পায় । প্রাথমিক অবস্থায় ফুসফুস ক্যান্সার এর যেসব লক্ষণ থাকে সে গুলো হলোঃ–
  • ‎দীর্ঘ দিন ধরে খুসখুসে কাশি ও বুকে ব্যাথা।
  • ‎হাঁপানি রোগীর হাঁপানি বেড়ে যায়। এবং ঘনঘন জ্বর হতে থাকে।
  • ‎বারবার ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়া দিয়ে আক্রমণ হওয়া।
  • ‎রোগীর ওজন কমতে শুরু করে এবং তার কিছু ক্ষণ পর পর ক্ষুধা লাগবে।

ফুসফুসে ক্যান্সার রোগ নির্ণয়

‎যে কোনো রোগ কে শুরু থেকে চিকিৎসা না করলে পরে তা মারাত্মক ভাবে হয়ে যায় । রোগের লক্ষণ দেখা মাত্র আমরা যদি দ্রুত রোগের চিকিৎসা করি তাগলে শুধু থেকে ফুসফুস ক্যান্সার নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবো । তাই ফুসফুসে ক্যান্সার রোগীকে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার আছে কি না বা কতটুকু বাড়ছে তা যাচাইয়ের জন্য থুথু বা শ্লেষা পরীক্ষা বা বিশ্লেষণ করা। 
বুকের এক্স-রে করা , সিটি স্ক্যান করা , এমআরআই করা ইত্যাদি । আর যদি রোগ বেশি দিন হয়ে যায় তাহলে চূড়ান্ত রোগ নির্ণয়ের জন্য সাধারণত সাইটো ও হিস্টেপ্যাথলিজিক্যাল পরীক্ষা করতে হবে ।

ফুসফুসে ক্যান্সার প্রতিরোধ

‎সাধারণত আমার জানি বর্তমানে ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার সবচেয়ে বেশি কারণ হচ্ছে ধূমপান ও মদ্যপান করা । সিগারেটর ধোঁয়া ফুসফুসকে ভিতর থেকে একেবারে শেষ করে পেলে । যার কারণে ফুসফুসে সমস্যার সৃষ্টি হয় । বিশেষজ্ঞদের মতে , ফুসফুসে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে যে যে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে । যথাঃ
  • ‎ধূমপান ও মধ্য পান না করা।
  • ‎অতিরিক্ত চর্বি জাতিয় খাবার না খাওয়া।
  • ‎নিয়মিত শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করা।
  • ‎এই খাবার বা খারাপ অবভ্যস থেকে বিরত থাকলে ফুসফুস ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব । আমরা এসকল অবভ্যস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবো।

ফুসফুসে ক্যান্সারের প্রতিকার

‎উপরে আমরা ক্যান্সার কি ভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি । এখন আমরা জানবো ফুসফুস ক্যান্সার কোন কোন অবস্থায় কি রকম চিকিৎসা করতে হবে । ফুসফুস ক্যান্সর প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা না করতে পারলে তা ধিরে ধিরে বেড়ে যায় । ফুসফুস ক্যান্সার রোগের লক্ষণ গুলো দেখা গেলে অতি তারাতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে । ফুসফুসে ক্যান্সার আছে কি না তা জানার পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে । যদি ক্যান্সার দ্রুত চড়িয়ে পড়ে তাহলে প্রোয়োজনে রেডিয়েশন থেরাপি করতে হবে । যেখানে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাধ্যমে ক্যান্সারের সকল কোষ গুলো কে ধ্বংস করে দিতে হবে ।

লেখকের শেষ মন্তব্য

‎মানুষের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে ফুসফুস । ফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার যদি আপনার ফুসফুস সুস্থ না থাকে তবে আপনিও সুস্থ নয় । ফুসফুসের একটি ভয়ংকর রোগ হচ্ছে ফুসফুসে ক্যান্সার । যা বর্তমান বিশ্বের সকল দেশেই প্রায় অনেকেই আক্রান্ত । আবার অনকেরই মৃত্যু ও হয়েছে । ফুসফুস ক্যান্সারে মৃত্যু হয়েছে বেশির ভাগই পুরুষ। সাধারণত ধূমপান করে প্রায় সকলেই , কিন্তু এই ধূমপান ও মধ্যপানই হলো আপনার ফুসফুসে ক্যান্সারে কারণ । আপনি যদি ফুসফুস ক্যান্সারের হতে বাঁচতে চান তাহলে এসকল নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। এ সকল নিয়ম মেনে চললে আমরা ফুসফুস ক্যান্সারের হাত থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারবো ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url