গয়া কাশি কোথায় অবস্থিত - কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির দর্শন গাইড বিস্তারিত জানুন
কাশি বিশ্বনাত মন্দির ভারতের একটি বিখ্যাত মন্দির।এই মন্দিরের প্রধান দেবতা শিব
বিশ্ব নাত। হিন্দু পুরাণে এই মন্দিরটির উল্লেখ পাওয়া যায়। মন্দিরটির শৈবধর্মের
প্রধান কেন্দ্রগুলীর অন্যতম। এখন গয়া কাশি কোথায় অবস্থিত বিস্তারিত জানুন।
অতীতে বহুবার মন্দিরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং পূননির্মিত হয়েছে। াআজ আমরা এই পোস্ট এ বিস্তারিত ভাবে জানবো যে গয়া কাশি কোথায় অবস্থিত - কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির দর্শন গাইড সহ সকল তথ্য তাই চলুন মূল আলোচনায় ফোকাস করি।
পোস্টের সূচিপত্রঃগয়া কাশি কোথায় অবস্থিত (কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির দর্শন গাইড
গয়া কাশি কোথায় অবস্থিত - কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির দর্শন গাইড
গয়া কাশি কোথায় অবস্থিত? এটি ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যোর বারাণসীতে অবস্থিত।কাশি বিশ্ব নাত মন্দির শিবের
বারোটি পবিত্র মন্দিরের অন্যতম।মন্দিরটি গঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। বারাণসী
শহরের অপর নাম কাশি, তাই মন্দিরটি কাশি বিশ্বনাত মন্দি নামে পরিচিত। এছাড়াও
কার্য়বলীর ভিত্তিতে কাশি শহরকে ধর্মীয় শহরও বলা হয়।কাশি মন্দিরটি ১৭৮০ সালে
ইন্দোরের মহারাণি অহল্যাবাঈ হোলকার তৈরি করেন।১৯৮৩ সাল থেকে উত্তর প্রদেশ সরকার
এই মন্দিরটি পরিচালনা করে আসছে।কাশি বিশ্ব নাত মন্দিরে যাওয়ার যে রাস্তা তাকে
বিশ্ব নাত লেন বলে।এর চূড়া ১৫.৫ মিটার পুরু সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো।এ কারণে
মন্দিরটি স্বর্ণ মন্দির নামে পরিচিত। এছাড়াও মন্দিরের উত্তর দিকে একটি পাতকুয়া
রয়েছে।
কাশি বিশ্ব নাত মন্দিরের দর্শন
সকাল বেলা আশি ঘাটের গঙ্গা কিংবা সন্ধ্যা বেলা ডাঁসা সমেদ ঘাটের আরতি কিংবা
সন্ধ্যার সময়ের কিছু খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে গঙ্গা ভ্রমণ। কাশি বিশ্ব
নাত মন্দির ভ্রমণের জন্য কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে।বিশ্ব নাত মন্দিরের ভিতর কোনো
জিনিসপত্র নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। যেমনঃ- ব্যাগ,মোবাইল ফোন ইত্যাদি। কাশি বিশ্ব নাত
মন্দিরে ব্যাগ, মোবাইল ফোন ইত্যাদি জিনিসপত্র রাখার জন্য লকারের ব্যাবস্থা
আছে।লকারের মধ্যো সকলেই জিনিসপত্র রেখে ভিতরে প্রবেশ করে।
সতর্কতা মূলক বাক্য
গয়া বিশ্ব নাত মন্দিরে ভিতর যেতে হলে অনেক বড় লাইন অতিক্রম করে পূজা দিতে
হয়।এজন্য অনেক সময় লাগে। কিন্তু অনেক প্রতারক রয়েছে যারা আপনাকে বলবে কিছু টাকা
দেন আপনাকে তাড়াতাড়ি ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দিব। এসব প্রতারকদের কাছ থেকে দূরে থাকতে
হবে।
গয়া কিভাবে যাওয়া যায়
গয়া ভারতের একটি ছোট রাজ্য। এই গয়াতে আছে অনেকগুলো সমুদ্র সৈকত। গয়া প্রাকৃতিক
সুন্দরর্যে ভরপুর। গয়াতে শুধু সমুদ্রসৈককত নয় এখানে আরও দৃষ্টিনন্দন অনেক কিছু
আছে যেমনঃ-সবুজ পাহাড়, পূরানো গির্জা, প্রাচীন গুহা,ঝর্ণা, নারকেল গাছের সারি
ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃবাংলা রাশিফল ২০২৫ জেনে নিন
যা পর্যটকদের আর্কষণের মূল কারণ। তবে গয়াতে ভ্রমণের জন্য ডিসেম্বর বা জানুয়ারি
সবচেয়ে ভালো।কারণঃ- তখন আবহাওয়া খুব ভালো থাকে।নিম্নে কিভাবে গয়াতে যাবেন সে
বিষয়ে তুলে ধরা হলোঃ
মুম্বাই থেকে গয়া কিভাবে যাওয়া যায়
মুম্বাই থেকে গয়া পৌঁছানোর দ্রুততম বা সহজ উপায় হলো ফ্লাইটের মাধ্যম।এটি প্রায়
৬ ঘন্টা সময় নেয়। মুম্বাই থেকে গয়া পৌঁছানোর অন্যাতম সহজ উপায় বা সস্তা উপায়
হলো ট্রেন যা প্রায় ৩১ঘন্টা সময় নেয়। ট্রেনের মাধ্যোমে যেতে হলে অনেক সময়ের
ব্যাপার।
দিল্লি থেকে গয়া কিভাবে যাওয়া যায়
মহাবোধি এক্সপ্রেস হলো একটি বিশেষ ট্রেন যা দিল্লি এবং গয়ার মধ্যে প্রতিনিয়ত
বিরতিহীনভাবে চলাচল করে এবং দিল্লি থেকে গয়া পৌঁছাতে মাত্র১৬ ঘন্টা সময়
নেয়।এছাড়াও আপনি ফ্লাইটের মাধ্যমে গয়াতে পৌঁছাতে পারেন। দিল্লি থেকে গয়ার
ফ্লাইটের দুরত্ব ৮৮১কিলোমিটার।
বৃন্দাবন কোথায় অবস্থিত
আমরা ইতি মধ্যে,গয়া কিভাবে যাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানলাম।এখন আমরা জানবো,
বৃন্দাবন কোথায় অবস্থিত।তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই। সংস্কৃত ভাষায় বৃন্দাবন
কথাটি এসেছে বৃন্দা,তুলসী, ও বন, অরণ্য শব্দদুটি থেকে। নিধুবন ও সেবাকুঞ্জে ছোটো
দুটি তুলসীবন এখনও বিদ্যমান রয়েছে। বৃন্দাবন হলো ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের
মথুরা জেলার অন্তর্গত একটি শহর। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুসারে কৃষ্ণ এখানে নিজের
ছেলেবেলা কাটিয়েছিলেন।
শহরটি কৃষ্ণের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত। শহরটি জেলাসদর মথুরা থেকে ১১ কিলোমিটার
দূরে আগ্রাদিল্লির হাইওয়ের উপর অবস্থিত।হিন্দু ধর্মের বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে
এটি একটি পবিত্র তীর্থস্থান।বৃন্দাবন শহরে রাধা ও কৃষ্ণের অনেকগুলি মন্দির
রয়েছে।যেমনঃ- মদনমোহন মন্দির,গোবর্ধন অঞ্চলে কুসুম সরোবর স্থান ইত্যাদি।
- ১.মদনমোহন মন্দিরঃ এটি বৃন্দাবন প্রাচীন মন্দিরের মধ্যে অন্যতম মন্দির।মদনমোহন মন্দির মুলতানের রাজা কাপুর রাম দাস কালীয়দমন ঘাটের নিকটে মদনমোহন মন্দিরটি নির্মাণ করেন।চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনের সঙ্গে এই মন্দিরটি অনেক ঘনিষ্ঠ।আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে এই মন্দিরের আদি মদনগোপাল বিগ্রহটি নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজস্থানের কারাউলিতে মন্দিরটি স্থানান্তরিত করেছিলেন। এখন এই মন্দিরে একটি প্রতিমূর্তি পূর্জিত হয়।
- ২.গোবর্ধন অঞ্চলে কুসুম সরোবর স্থানঃ হিন্দুধর্মের বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে বৃন্দাবন একটি পবিত্র তীর্থস্থান এবং এটি কৃষ্ণ উপাসনার একটি কেন্দ্র। বৃন্দাবন, গোবর্ধন ও গোকুল কৃষ্ণের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কৃষ্ণ ভক্তরা প্রতি বছর এই স্থানে তীর্থযাত্রায় আসেন এবং বিভিন্ন উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
- ৩.প্রেম মন্দিরঃ প্রেম মন্দির শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা হয়েছিল যা বৃন্দাবনের সর্বশেষ মন্দির গুলোর মধ্যে একটি।মন্দিরের কাঠামো তৈরি করেছিলেন আধ্যাত্নিক গুরু কৃপালু মহারাজ।মন্দিরটি নির্মাণ করতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।প্রেম মন্দিরটি একটি দুর্দান্ত মন্দির কমপ্লেক্স যা ভক্ত ও পর্যটকদের আর্কষণের মূল কারণ।মন্দিরটি ভগবান কৃষ্ণ এবং রাধার প্রতি তাদের চিরন্তন ভালবাসাকে উৎসর্গকৃত। নিখুঁত স্থাপত্য এবং জটিল কারুকাজ দিয়ে নির্মিত এই প্রেম মন্দিরটি।
বুদ্ধগয়া কোথায় অবস্থিত
আমরা ইতি,মধ্যে বৃন্দাবন কোথায় অবস্থিত এবং বৃন্দাবন সম্পর্কিত সকল তথ্য
জেনেছি।এখন আমরা জানবো বৃদ্ধা গয়া সম্পর্কিত তথ্য। তাই চলুন জেনে নিই। বৃদ্ধাগয়া
বৌদ্ধদের কাছে পবিত্রস্থল তো বটেই, হিন্দু ও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছেও সমান
আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হলো বিহারের বুদ্ধগয়া। এই মঠের মূল আকর্ষণ হলো মহাবোধি
মন্দির।মহাবোধি মন্দির গৌতম বুদ্ধ এই বোধি গাছের তলায় নির্বাণলাভ করেছিলেন।
এই পবিত্র বোধি গাছ হলো মন্দিরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। বৌদ্ধধর্মে বলা হয়েছে,
এই গাছের তলায় দীর্ঘ তপসার পর রাজপুত্র সিদ্ধার্থ গৌতম নির্বাণলাভ করেছিলেন।
তারপর তাঁর নাম হয় বুদ্ধ। নির্বাণলাভের পর প্রথম সপ্তাহটি এই গাছের তলাতেই
কাটিয়েছিলেন। মূল মন্দিরের পশ্চিমে একটি নির্জন জায়গায় বিশালাকৃতি এই বোধি গাছটি
এখনও আছে এই গাছ। এখানে বৌদ্ধরা নিয়মিত সাধনা ও প্রার্থনা করেন। পুজাপাঠও
চলে।
শোনা যায়, তৃতীয় শতাব্দীতে সম্রাট অশোকের আদেশে এই মন্দির নির্মিত হয়েছিল এবং
পরবর্তীকালে গুপ্ত বংশের রাজারা এই মন্দিরটির সংস্কার করেন। পাটনা থেকে মাত্র ৯৬
কিমি দূরে অবস্থিত এই বৌদ্ধদের পবিত্র মন্দির স্থাপনে এগিয়ে আসেন চিন, জাপান,
ইন্দোনেশিয়া, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ইত্যাদি
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশ গুলো। ২০০২ সালে এই মন্দির ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট
হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
গয়া কোন রাজ্যে অবস্থিত
গয়া জেলা হলো ভারতের বিহার রাজ্যের ৩৯টি জেলার মধ্যো অন্যতম। এই জেলা ১৮৬৫ সালের
৩ অক্টোবর গঠিত হয়েছিল। ভারতের পশ্চিম উপকূলে একটি রাজ্য গয়া, একটি সমৃদ্ধ
ইতিহাসসহ প্রাক্তন পর্তুগিজ উপনিবেশ।এই জেলার সদর শহর গয়া বিহারের দ্বিতীয়
বৃহত্তম শহর।প্রায় ১৪ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে ৩,৭০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত।
এটিতে ভারতীয় এবং পর্তুগিজ সংস্কৃতি এবং স্থাপত্যের অনন্য মিশ্রণ রয়েছে, যা
প্রতি বছর আনুমানিক ২৫ লক্ষ দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
কাশি বিশ্বনাতকে সাধারণত হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রেমের প্রধান স্থান হিসেবে ধরা
হয়। কাশি বিশ্বনাত মন্দির হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী পবিত্র মন্দির গুলোর
মধ্যে অন্যতম।কাশি বিশ্ব নাত মন্দিরের ভেতর রয়েছে শিব,জ্যোতি লিঙ্গ।হিন্দুরা আরও
বিশ্বাস করেন গঙ্গায় একটা ডুব দিয়ে মন্দির দর্শন করলে মোক্ষ লাভ করা সম্ভব।আশা
করি, গয়া কাশি সম্পর্কিত সকল তথ্য জানাতে পেরেছি।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য,ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url