ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিনের জন্য - শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল
হ্যালো,পাঠকবিন্দ আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন।আজ আপনাদের সাথে
ফিটনেস প্ল্যান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিনের জন্য গুলো আলোচনা করবো।ব্যস্ত জীবনে এগিয়ে
যাওয়ার জন্য ফিটনেস ধরে রাখাটা জরুরী। ফিটনেস ধরে রাখতে হলে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের
পাশাপাশি প্রয়োজন এক্সারসাইজ।আমাদের সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই শারিরীক ফিটনেস অনেক
বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

পোস্টের সূচিপত্রঃ ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিনের জন্য - শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল
ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিনের জন্য
আপনাদের জন্য রইল ৩০ দিনের জন্য স্পেশ্যাল ফিটনেস প্ল্যান।এইবার সত্যি করে বলুন
তো, কি মনে হয় আপনাদের, ৩০ দিনের মধ্যে সত্যিই ওজন কমানো সম্ভব?হ্যা অবশ্যই !
আমরা তো সেটাই বলছি!কিন্তু তার জন্য আপনাকে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিতে হবে না,
আবার প্রয়োজন ও হবে না জিম ক্লাবে যাওয়ার। বাড়িতে বসেই ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিনের জন্য বা মাত্র এক মাসের মধ্যে
অনায়াসে ওজন কমিয়ে ফেলতে পারবেন।ফিটনেস প্ল্যান হল শারীরিক ব্যায়ামের
পরিকল্পিত সেশনের একটি সময়সূচী।শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করাটা
অত্যন্ত জরুরি।
ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিনের জন্য ফিটনেস ভালো থাকলে সুঠাম দেহের অধিকারী হওয়া সম্ভব এবং নিজের কাছে ও লাগে ভালো।
এই সেশনগুলি আরামদায়ক ব্যায়াম হতে পারে, যেমন পার্কের চারপাশে হাঁটা,দিনে
নুন্যতম ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। নিজের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন, যেমন
সকালে অথবা বিকেলে।বন্ধুদের সাথে একসাথে ব্যায়াম করলে আগ্রহ বাড়ে।এক্সারসাইজ
শুরু করা নিয়ে অলসতা থাকে। এটি কিন্তু খুবই কমন একটা বিষয় ! আমরা অনেকেই
এক্সারসাইজ করতে চাই, কিন্তু অলসতা আমাদের আটকে রাখে।অলসতা কাটিয়ে এক্সারসাইজ
শুরু করতে হলে প্রথমে একটি সহজ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
হোল বডি’ এক্সারসাইজের উপর জোর দিন
যেসব এক্সারসাইজে কম্পাউন্ড মুভমেন্ট রয়েছে,অর্থাৎ যে গুলোতে শরীরের প্রতিটি
পেশির ক্ষমতা বাড়ে, এমন শরীরচর্চা করলে তো দ্রুত মেদ ঝরবেই, সাথে দেহের
ক্ষমতাও বাড়বে। তাই সবাই যদি ভেবে থাকেন শুধুমাত্র ওয়েট তুলেই দ্রুত ওজন কমিয়ে
ফেলা সম্ভব, তা হলে আপনারা ভুল ভাবছেন। তবে এক্সারসাইজ শুরু করা মাত্রই যে ওজন
কমবে, এমনটি নয়। প্রথমে শরীরে ঘামের সঙ্গে দূষিত পদার্থ বের হবে, তারপর
ধীরে-ধীরে মেদ ঝরতে শুরু করবে। তাই বলবো ধৈর্য ধরে ৩০ দিন শরীরচর্চা চালিয়ে না
গেলে কিন্তু তেমন কোনো উপকার পাবেন না।
এক্সারসাইজের পাশাপাশি ডায়েটের দিকেও নজর দেওয়াটা খুবই জরুরি
এক্সারসাইজের পাশাপাশি ডায়েটের দিকেও নজর দিতে হবে অবশ্যই।কেননা ওজন কমাতে
ডায়েটিংয়ের ভূমিকা ৭০ শতাংশ।বাকি কাজটা শরীরচর্চার মাধ্যমে করা সম্ভব হয়। তাই
এক্সারসাইজের পাশাপাশি প্রতিদিন ডায়েটের দিকে নজর না দিলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব
নয়। তা হলে কি খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিতে হবে? না,কখনোই নয় তেমন কিছুই করতে হবে
না,তবে শুধুমাত্র কতগুলি নিয়ম চালিয়ে যেতে পারলেই হবে। যেমন ধরুন, ফাইবার
সমৃদ্ধ শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে।
কারণ, ফাইবার দীর্ঘ সময় পেটের ক্ষুদা নিবারন করতে সক্ষম। ফলে শরীরে অতিরিক্ত
ক্যালরির প্রবেশ করতে পারেনা যার জন্যে ওজন হ্রাস করা দ্রুত সম্ভব।এছাড়াও আর
অনেক নিয়ম মানতে হবে।যেমন ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পযর্ন্ত , দিনের প্রধান তিনটি
মিলেই যেন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকে। প্রোটিন বহুক্ষণ পেটের ক্ষুদা নিবারন
করিয়ে রাখে।তাছারা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের পেশির গঠনেও কাজ করে। তাই তো
এক্সারসাইজের শুরুর দিন থেকে প্রোটিনের উপর ভরসা না রেখে উপায় নেই।
এ ছাড়াও আর কী-কী নিয়ম মানতে হবে?
সকালের খাবার থেকে শুরু করে রাতের খাবার পযর্ন্ত, প্রধান তিনটি সময়ের যেন
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার পেটের ক্ষুদা নিবারনের জন্য
অধিক সময় বজায় রাখে। সঙ্গে পেশির গঠনেও অধিক দ্রুত কাজ করে থাকে। তাই তো
এক্সারসাইজের প্রথম দিন থেকে প্রোটিনের উপর ভরসা না রেখে কোনো উপায় নেই।
অনেকেই এমনটা বিশ্বাস করেন যে, শরীরকে শুকনো ও ওজন কমানোর জন্য আমিষ খাবারের
তালিকা ভূক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
কারণ, ডায়েটিং-এর সময় কোনো কোলড্রিংস জাতীয় খাবার সেবন করার সম্পুর্ন
নিসিদ্ধ।যে কোন খাবার সেবন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে পেটের কিছু
আংশিক ক্ষুধা বজায় রাখতে হবে।যাঁরা গৃহবধু, তাঁরাও উপরুক্ত তথ্য মেনে চলতে
পারেন। তবে সেই সঙ্গে নিয়মিত এক্সারসাইজ চালিয়ে যেতে ভুলবেন না যেন।উপোরুক্তের
তথ্যগুলো মানিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই আমাদের ৩০ দিনের মধ্যে ফিটনেস গঠন করা সম্ভব।
শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল
- শরীরে পর্যাপ্ত পরিমানে পানির সঞ্চালন বজায় রাখুন।
- প্রতিনিয়ত প্রধান তিনটি সময়ের খাবার প্রতি দিন একি টাইমে সেবন করুন।
- প্রতিদিন খাবার শেষ করার পর অল্প হলেও ফলের তালিকা রাখুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম ও বিশ্রাম করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- প্রতিদিন মিনিমাম ৩০ মিনিট হাঁটা-চলা করুন।
- শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বিভিন্ন স্থানে ঘোরা-ফেরা করুন।
- প্রতিদিন নিন্মতো চার থেকে পাঁচটি সবজি আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন।
ছেলেদের শরীর ফিট রাখার উপায়
শরীর ফিট রাখতে হলে প্রথম শর্ত স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।স্বাস্থ্য
ঠিক রাখতে প্রয়োজন সঠিক সময়ে সঠিক খাদ্য খাওয়া।এর সঙ্গে করতে হবে শারীরিক
ব্যায়াম ও কঠোর পরিশ্রম। বাইরে যে কোন স্থানে অবস্থান করার ক্ষেত্রে নিয়মিত
পানি পান করুন।এ-র সাথে সাথে সম্পুর্ন নিশিদ্ধ করতে হবে স্মকিং ও নেশা যুক্ত
দ্রব্য সমুহ।
আরো পড়ুনঃ শিশুর মানসিক বিকাশের উপায় জেনে নিন
বাইরে যাওয়ার সময় আপনার সাথে নিতে পারেন বাদাম, আমন্ড, কাজু, ওয়ালনাট,
তিসির বীজ, বাড়িতে তৈরি ভ্যানিলা সমৃদ্ধ খাবার। বাইরে চকলেট, চিপস না খেয়ে
খেতে পারেন এই এগুলো।একজন পুরুষের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারী উপাদানের জন্য
তালিকায় কিছু খাবার রাখা খুবই জরুরি। তাহলে এবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক কোন
খাবার খেলে শক্তি এবং প্রজনন ক্ষমতা বাড়ে পুরুষের যেমনঃ
কলা
সহজে এবং অল্প খরচে শরীরে শক্তি বাড়াতে সব চেয়ে উপযুক্ত খাবার হচ্ছে কলা।
প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কলা রাখলে পুরুষের মধ্যে শারীরিক ক্ষমতা বাড়ে বলে মত
বিশেষজ্ঞদের। এ ছাড়া স্বাস্থ্যের আরও অনেক উপকার করে থাকে এই ফল।
ডিম
প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই ডিম খুবই উপকারী ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার।প্রোটিন, আয়রন,
ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি-তে ভরপুর ডিম প্রতিদিন খাবার তালিকায় রাখলে
স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
আপেল
পুরুষের স্বাস্থ্যের জন্য একটি করে আপেল দৈনিক খাবারের তালিকায় রাখা
গুরুত্বপূর্ণ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আপেল দুর্বলতা কমাতে
সাহায্য করে।
ব্রকলি
সকল সবুজ শাক-সবজির মধ্যে অবশ্যই ব্রকলি রাখাটা দরকার প্রতিদিনের খাবারের
তালিকায়।কেননা ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে উপকারী উপাদান রয়েছে।তাছাড়া ক্যান্সার
এবং হৃদরোগের মতোঅনেক ধরনের অসুখকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
মেয়েদের শরীর ফিট রাখার উপায়
সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি উপাদান।নারীদের বিভিন্ন
বয়সে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা হয়ে থাকে।এজন্য প্রতিটি কর্মজীবী নারীকে প্রয়োজনীয়
চাহিদা অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করতে হবে।সঠিক পুষ্টিকর উপাদান যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য,
বদহজম, অ্যালার্জি আর মাথাব্যথার মতো রোগকে দূরে ঠেলে দেয় আবার তেমনি সুন্দর
চুল, ত্বক ও স্বাস্থ্যর উপহার করে।যে খাবার গুলো খাবেন যেমন, সারাদিন প্রচুর
পরিমাণে পানি খেতে হবে। পানির মাধ্যমে অক্সিজেন ও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান
সম্পূর্ণ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং দূষিত বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের হয়।
সারাদিনে অতিরিক্ত ক্যাফেইন যুক্ত খাবার যেমন, চা, কফি, চকোলেট খাওয়া উচিত ঠিক
নয়।সকালের নাশতা কখনও বাদ দেওয়া যাবে না।তবে সকালের নাশতা খুব বেশি ভারিখাবার
খাওয়া যাবে না, এতে হজমের জন্য শরীরে প্রচুর শক্তির অপচয় হয়ে থাকে। প্রতিদিনের
খাবারের তালিকায় আমিষ জাতীয় খাবার থাকতে হবে।কেননা আমিষের সবচেয়ে ভালো উৎস
হচ্ছে ডাল, ডিম, মাছ, মাংস ও বাদাম। প্রতিদিন আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
খুব বেশি প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা পোড়া খাওয়া উচিত নয়।ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের খুব
ভালো উৎস হলো দুধ, শাকসবজি ইত্যাদি। রাতের খাবার হতে হবে খুব হালকা। রাতে
ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করতে হবে।এবং এর সঙ্গে
সারাদিনে মাত্র ৩০ মিনিট যেকোনো হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করার অভ্যাস করতে
পারলেই নারী থাকবে ফিট আর সুস্থ।
শরীর ও মন সুস্থ রাখার উপায়
সুস্থ থাকার মানে কেবলমাত্র শারীরিকভাবেই সুস্থ থাকাটাকে বুঝায় না, মানসিকভাবেও
ভালো থাকাকে বোঝায়। তাই যখনই সুস্থ থাকার প্রসঙ্গ আসবে, শরীর এবং মনের যত্নের
প্রতি মনোযোগী হতে হবে।কেননা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি
সুস্থ থাকার পথটি সহজ রাখতে পারবেন। শরীর ভালো থাকলে তার ছায়া থাকে মনে, আবার
মন খারাপ থাকলে তার প্রভাব পড়ে শরীরের উপর। তাই শরীর ও মন সুস্থ রাখা সমান
জরুরি।
মন খালি চোখে দেখা না গেলেও তার যত্নের প্রতি উদাসীন হওয়া যাবে না।শরীর
সুস্বাস্থ্যের জন্যে যেমন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।বাড়িতে
রান্না করা খাবার খাবেন। রান্নার পদ্ধতি যেন স্বাস্থ্যকর হয়, সেদিকে খেয়াল
রাখুন অবশ্যই।তেমনি ভবিষ্যতের কথা ভেবে মানসিক চাপ বাড়ানো যাবে না।মনের প্রতি
যত্নশীল হবেন। মন কী চায় তা ভেবে দেখবেন। মনের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করতে যাবেন
না। তবে অনেক সময় মন অযৌক্তিক কিংবা অবাস্তব কিছু চাইতে পারে। তখন মনকে বোঝাতে
হবে। আবেগ এবং বিবেকের সমন্বয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শিখুন।
মন ভালো থাকলে তা আপনার শরীর ভালো রাখতেও সাহায্য করবে।এবং আমাদের সুস্থ ও
সুন্দর থাকার জন্য নিয়মিত ভালো ঘুম অনেক জরুরি। যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমান,
তাদের শরীর ও মন ভালো থাকে। অপরদিকে অনিদ্রার কারণে দেখা দিতে পারে আরও অনেক
সমস্যা।তাই ঘুম যাতে ভালো হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
মন্তব্য
ওজন কমানোর নতুন ট্রেন্ড 'ফিটনেস প্ল্যান ৩০ দিন' সম্পর্কে যারা জানতেন না,
আজকে তারাও ক্লিয়ার আইডিয়া পেয়ে গেলেন আশা করি। সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটা শুধু
নিজের জন্য না, আপনার আশেপাশে থাকা আপনজন মানুষদের জন্যেও কিন্তু এটি দরকার।
কারণ আপনি নিজে যদি ভালো থাকতে না পারেন, তাহলে অন্যকেও ভালো রাখতে পারবেন না!
যেকোনো শারীরিক সমস্যায় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। সুস্থ শরীরের
জন্য প্রয়োজন সুস্থ মন, এটা ভুলে গেলে চলবে না।তাহলে আজ এই পর্যন্তই। ভালো
থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url