পায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
আসসালামু আলাইকুম, সুপ্রিয় পাঠক আজকের প্রতিবেদনে আপনাকে স্বাগতম।আশা করি সকলে
ভালো আছেন।উপরের টাইটেলটি দেখে আশা করছি বুঝতে পেরেছেন যে আজকের আলোচনা কি নিয়ে।
আজকের এ-ই প্রতিবেদনে আমি আপনাদের সাথে পায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
নিয়ে আলোচনা করবো।আজ কাল পায়ের গোড়ালি ফাটা নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তা করে।এই
দুশ্চিন্তা যেন আপনারা না করেন সেই বিষয়টি নিন্মে তুলে ধরা হলো। আপনি অবশ্যই
প্রতিবেদনটি মনোযোগ দিয়ে দিয়ে পড়বেন।
পায়ের গোড়ালি ফাটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। দেখা যায় অনেক সময় আমরা হাত মুখের
যত্ন নিলেও পায়ের যত্ন টাই এড়িয়ে যাই, পায়ের গোড়ালির যত্ন তো কখনই নেওয়া হয়
না। মনে হতে পারে যে এটা শুধু সৌন্দর্যগত সমস্যা, কিন্তু না এটা অনেক সময়ই
বিরক্তির উৎপাদন করতে পারে। এর থেকে গুরুতর কিছু শারীরিক সমস্যাও হয়ে থাকে । চলুন
আজ আমরা জেনে নিই পায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত।
পোস্টের সূচিপত্রঃপায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
পায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
শুধু শীতকাল পা ফাটার কারন নয়।বিভিন্ন কারনেও পা ফেটেনে থাকে। শীতকাল ছাড়াও অন্য
সময় গুলোতে পা ফাটে।শরীরের সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে পায়ের গোড়ালির পায়ের উপর। এমন
অনেকেই আছেন যাদের গোড়ালি সারা বছরই ফাটে।কিন্তু পায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার তাদের সব সময় যত্ন নিতে হয়।
যাদের পায়ের গোড়ালি শুধু শীতকালে ফাটে তাদের ও সারা বছর পায়ের যত্ন নেয়া উচিত
কারন তাদের শীতকালে যেন আর না ফাটে। আর এজন্যই পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। তাছাড়া
শুষ্ক আবহাওয়াতে পায়ের গোড়ালি বাইরে থাকার কারনেও পায়ের গোড়ালি ফাটতে পারে।
রাস্তার ধূলাবালি বা মাটির সংস্পর্শের কারনেও অনেক সময় গোড়ালি ফেটে থাকে।পায়ের
গোড়ালি ফাটা খুবই কষ্টকর হয়।দেখা যায় অনেক সময় রক্ত পরে পায়ের গোড়ালি থেকে।
সচেতনভাবে পায়ের ত্বকের যত্নের অভাবের কারন এ-র পেছনে। এই সমস্যা খুব সহজেই দূর
করা যায়।পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার নিন্মে লেখা গুলো পরে জেনে
নিন-
পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণঃ
- শরীরে ভিটামিন এর অভাব হলে পা ফাটে। মানব দেহে ক্যালসিয়াম, জিংক ও আয়রনের ঘাটতি থাকায় পা ফাটার অন্যতম কারণ।
- অল্প ফেটে গেছে এরোকম জায়গার চামড়াকে জোরে জোরে টেনে তোলা।
- শরীরে পানিশূন্যতার কারণে পা ফেটে থাকে।পানিশূন্যতা দূর করতে হলে অবশ্যই প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করবেন।
- খুব বেশি গরম পানিতে গোসল করা, ধুলাবালি, দীর্ঘদিন ধরে পায়ের যত্নের না করা, অপরিচ্ছন্ন জুতা পরিধান করা, অতিরিক্ত পুষ্টির অভাবের কারনে পা ফেটে থাকে।
- প্রতিদিন পা পরিষ্কার না করা, ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চার ব্যবহার করার পরে তা সঠিকভাবে পরিষ্কার না করে আবার লোশন দেওয়া , ক্রিম বা ময়েশ্চার ব্যবহার করা ইত্যাদি।
পায়ের গোড়ালি ফাটার চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ
একবার যদি গোড়ালি ফেটে যায়,তাহলে তার নিয়মিত চিকিৎসা করতে হবে।এবং অবশ্যই
প্রথমে পা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে, নাহলে ব্যাকটেরিয়ার
সংক্রমণ হতে পারে। পা ফেটে গেলে বেশি ঘষা ঘষি করবেন না, এর ফলে রক্তপাত হতে পারে।
উষ্ণ গরম পানিতে লেবু এবং শ্যাম্পু দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন ২০ মিনিট অন্তঃপক্ষে,
তারপর আলতো করে নরম কোন ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
অয়েন্টমেন্ট অথবা ক্রিম ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুনঃশীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার
সাধারণ ভাবে ক্লোবিটাসল বা ১০% স্যালিসাইলিক এসিড অয়েন্টমেন্ট দেয়া হয়।তবে
কোনো কিছুই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত হবে না।কেননা সোরিয়াসিস
নামক রোগেও পা ফাটতে পারে,তখন কিন্তু ঘরোয়া চিকিৎসা কাজে দিবেনা।ঘরোয়াভাবে
ভ্যাসলিন অথবা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন একটু পর পরই দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আর
পা ফাটা কমে এলে নিয়মিত যত্ন নিবেন যাতে ভবিষ্যতে আর না ফাটে পা। পায়ের গোড়ালি ফাটার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
ঘরোয়া পরিচর্যা
- এক চামিচ ভ্যাসলিনের সাথে কয়েক ফোটা লেবু মিশিয়ে ফাটা অংশে লাগিয়ে রাতভর মোজা পরে থাকলে, কয়েকদিনেই আকর্ষণীয় রেজাল্ট পাবেন।
- ভেজিটেবল অয়েল গোড়ালির ফাটা অংশে লাগাতে পারেন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে।তবে রাতভর পা ঢেকে রাখতে হবে অবশ্যই, এক্ষেত্রে মোজা ব্যবহারও করতে পারেন।
- পা ফাটার উপরে কলার পুরু পেস্ট ওখানে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর পানি দিয়ে ধুঁয়ে ফেলুন।
- পরিষ্কার এবং ময়েশ্চারাইজ , পা ফাটা রোধ করতে খুবই কাযর্করি।পরিষ্কার করার সবচেয়ে ভালো উপায় হল একটি পরিষ্কার বালতিতে সহনীয় মাত্রার গরম পানি নিয়ে তাতে শ্যাম্পু মিশিয়ে নিবেন। এতে একটু লেবুর রস এবং লবণ মিক্স করে পা ভিজিয়ে রাখবেন। কিছুক্ষণ পর গোড়ালির মৃত কোষগুলো নরম হয়ে এলে ব্রাশ করুন। এরপর শুকনো কাপড় দিয়ে পানি মুছে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।
পায়ের গোড়ালি ফাটার সমাধান
পা ফাটা রোধ করতে অ্যালোভেরা এবং গ্লিসারিন ব্যবহার করুন । একটি পাত্রে
অ্যালোভেরা জেল নিন এবং এতে এক চামচ গ্লিসারিন যোগ করে ভালো করে মেশিয়ে নিন এবং
একটি পেস্ট তৈরি করুন । হালকা গরম পানিতে আপনার পা পরিষ্কার করুন এবং এই পেস্টটি
ফাটা গোড়ালিতে লাগান।পায়ের গোড়ালিতে এটি আর্দ্রতা ধরে রাখবে এবং গোড়ালি কম
ফাটবে।
পায়ের গোড়ালি ফাটার ক্রিম
পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া, হাত পায়ের আঙ্গুলের চিপায় ফেটে যাওয়া ,খসখস করা
নিমিষেই হয়ে যাবে শেষ আমরা নিয়ে এসেছি আপনাদের জন্য খুব ভালো একটা ক্রিম পায়ের
গোড়ালি ফাটা রোধ করতে , পায়ের যত্নে এই ক্রিমটির কার্যকারিতা অনেক বেশি
গুরুত্বপূর্ণ ।পা নরম ও কোমল করবে,পায়ের খসখসে ভাব দূর করবে।পা কে রাখবে
আকর্ষণীয়।
- Banana Milk Foot Cream
পা ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
পা ফাটার অনেক গুলো কারণের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য কারণ হলো ভিটামিনের
অভাব।বিশেষ করে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি ত্বকের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে । তাই এই ভিটামিনগুলির অভাবে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে ।
যার মধ্যে অন্যতম কারন হলো পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া।
পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায়
পায়ের গোড়ালি ফাটা রোধ করতে গরম পানি খুবই কার্যকর। এক বালতি গরম পানিতে লবণ, ১
চামচ বেকিং সোডা, এবং কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল দিন এবং ১৫-২০ মিনিট পা ভিজিয়ে
রেখে ব্রাশ দিয়ে ঘষুন আলতো ভাবে। তারপর পা ভালোভাবে শুকিয়ে ময়েশ্চারাইজার
লাগান।
আরো পড়ুনঃশরীরচর্চার জন্য সেরা যোগব্যায়াম
গ্লিসারিন ও গোলাপজল পায়ের ফাটা নরম করতে সাহায্য করে।আবার পা ফাটার উপরে কলার
পুরু পেস্ট লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখতে পারেন। এক চামচ ভ্যাসলিন এর সাথে কয়েক ফোটা
লেবু মিশিয়ে পায়ের ফাটা অংশে লাগিয়ে রাতভর মোজা পরে থাকলে, কয়েকদিনেই
আকর্ষণীয় রেজাল্ট পাওয়া যায়।
মন্তব্য
পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা শুধু সৌন্দর্যের সমস্যাই না, স্বাস্থ্যগত সমস্যাও
বটে। এ কারণেই নিয়মিত পায়ের যত্ন নিতে হবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে হবে। সারাবছরই সচেতন থাকতে হবে। সব ঋতুতেই পায়ের যত্ন নিবেন, গোড়ালি ফাটা
প্রতিরোধ করুন এবং সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url