ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি - ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা সমূহ
বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি অনেক ব্যাংক ই আছে তার ভিতরে ডাচ বাংলা ব্যাংক হচ্ছে
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি আমরা হয়তো অনেকেই লেনদেন করি
কিন্তু ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি সম্পর্কে কোন কিছুই আমরা জানি না।যারা জানে না তাদের
জন্য আজকের পোস্টটা অনেক বেশি হেল্পফুল হতে চলেছে।
আজকে আমরা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো। এই তথ্যগুলো
সম্পর্কে আপনার যদি ধারণা থাকে তাহলে যে কোন সমস্যায় আপনি নিজে নিজের সমস্যার
সমাধান করতে পারবেন আজকে পোস্টে আলোচনায় থাকবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি , ডাচ
বাংলা ব্যাংকের মালিক, শাখা, সেবা, হেড অফিস, নাম্বার, হেল্পলাইন ইত্যাদি
ইত্যাদি।
পোস্টের সূচিপত্রঃ ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি - ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা সমূহ
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি
ডিবিবিএল এর ফুল ফর্ম হল ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি এটি একটি বেসরকারি ব্যাংক। এই
ডাচ বাংলা ব্যাংকটি ১৯৯৪ সালে নিবন্ধিত হয়েছিল একটি পাবলিক ব্যাংক লিমিটেড
হিসেবে । এই ডাচ বাংলা ব্যাংকটি মানুষের ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্যই প্রতিষ্ঠিত
হয়েছিল। ১৯৯১ সালে নেদারল্যান্ডের ডাচ ফিনান্সিং সংস্থা এবং বাংলাদেশের বেশ কিছু
উন্নয়নশীল দেশে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল এই ডাচ বাংলা ব্যাংকটি। এই ডাচ বাংলা
ব্যাংকের দুইটি এক্সচেঞ্জ হাউস আছে। একটি হলো ঢাকাতে অবস্থিত আর অন্যটি হচ্ছে
চট্টগ্রামে অবস্থিত।
এই এক্সচেঞ্জ হাউজ দুটি নিবন্ধিত হয়েছিল ২০০৪ সালে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি বা ডাচ বাংলা ব্যাংকের মালিক
যিনি তিনি হলেন সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ চেয়ারম্যান অফ ডাচ বাংলা ব্যাংক।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নেদারল্যান্ডের ডাচ ফিনান্সিং সংস্থা এবং বাংলাদেশের এম
সাহাবুদ্দিন আহমদ হলেন ডাচ বাংলা ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। এই ডাচ বাংলা ব্যাংকে যে
সেবা গুলো দেওয়া হয়ে থাকে তার মধ্যে আছে এটিএম সেবা, কর্পোরেট ব্যাংকিং,
ব্যাংকিং সেবা, বিনিয়োগ ব্যাংকিং, কনজিউমার ব্যাংকিং ইত্যাদি।
ডাচ বাংলা ব্যাংক এর মালিক কে
ডাচ বাংলা ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এম সাহাবুদ্দিন আহমেদ এর মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান
আহমেদ বর্তমানে ডাচ বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে সেখানে নিযুক্ত রয়েছেন।
সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সাদিয়া
রাইমান আহমেদ ঢাকার যে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল রয়েছে সেখান থেকে পড়াশোনা
শেষ করে বাহিরে দেশে চলে যান। টরেন্টো ইনভারসিটি থেকে সেন্ট জর্জ এবং কানাডার
ব্রাংকসাম হল থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। আগে ডাচ বাংলা ব্যাংক এর পুরাতন
চেয়ারম্যান ছিলেন সায়েম আহমেদ।
আরো পড়ুনঃঅনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সাহাবুদ্দিন আহমেদ তার মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ কে ২০২১ সালে উপহার হিসেবে
ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোট শেয়ার থেকে এক কোটি ছাব্বিশ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার গিফট
করেছিল। সাদিয়া রাইয়ান আহমেদের বাবা সাহাবুদ্দিন আহমেদ অনেক ব্যবসায়
প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন। আর সেই সুবাদে সাহাবুদ্দিন আহমেদের মেয়ে সাদিয়া
রাইয়ান আহমেদ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়েছেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা সমূহ
সব মিলিয়ে বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংকটি
অন্যতম এটি 1996 সালে শুরু হয়েছিল। ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা সমূহ রয়েছে ১৮৪ টির মতো
আর এটিএম বুথ রয়েছে ৪৭৮৮ টির মতো এবং এজেন্ট ব্যাংক রয়েছে পাঁচ হাজারের মতো।
বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাংক গুলোর ভিতরে ডাচ বাংলা ব্যাংক কিন্তু অন্যতম। নিম্মে ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা সমূহ এর নাম উল্লেখ করা হলোঃ
- মতিঝিল ফরেক্স শাখা,
- কারওয়ান বাজার শাখা,
- শান্তিনগর শাখা,
- ধানমন্ডি শাখা,
- মহাখালী শাখা,
- মিরপুর শাখা,
- গুলশান শাখা,
- উত্তরা শাখা,
- ইসলামাপু শাখা,
- দনিয়া শাখা,
- ঢাকা ইপিজেড শাখা,
- এলিফ্যান্ট রোড শাখা,
- নয়াপাড়া শাখা,
- জয়পাড়া শাখা,
- সাভার বাজার শাখা,
- বসুন্ধরা শাখা,
- রিং রোড শাখা,
- বান্দরা শাখা,
- মিরপুর সার্কেল-১০ শাখা,
- রামপুরা শাখা,
- দক্ষিন খান এগি শাখা,
- মেগুলা এগ্রি শাখা,
- বিজয়নগর শাখা ,
- প্রগতি সরণী শাখা,
- মাতুয়াইল শাখা,
- কেরানীগঞ্জ শাখা ,
- সোনারগাঁও শাখা,
- জনপদ শাখা,
- আসকোনা শাখা,
- ভাটারা শাখা,
- পল্লবী শাখা,
- উত্তর খান শাখা,
- আশুলিয়া শাখা,
- রোহিতপুর শাখা,
- মান্দা শাখা,
- আটি বাজার শাখা,
- আমিন বাজার শাখা,
- ওয়ারি শাখা,
- খুলনা শাখা,
- যশোর শাখা,
- ঝিনাইদা শাখা,
- বেনাপোল শাখা,
- সাতক্ষীরা শাখা,
- মাগুরা শাখায়,
- নড়াইল শাখা,
- চুয়াডাঙ্গা শাখা,
- কুড়ি গ্রাম শাখা।
ইত্যাদি সহ আরো বেশ কয়েকটা শাখা আমাদের বাংলাদেশে অবস্থিত রয়েছে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সেবা সমূহ
অন্য ব্যাংক গুলো থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা একটু বেশিই পাওয়া যায়।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের ভিতরে কিন্তু বিভিন্ন শাখা উপ শাখা এজেন্ট ব্যাংকিং সহ
বিভিন্ন ভাগ আছে। তবে এখানে যেই সেবাগুলো আপনারা পাবেন সেগুলো সব ডাচ বাংলা
ব্যাংকেরই অন্তর্ভুক্ত। ডাচ বাংলা ব্যাংকে যে সেবাগুলো আছে সেগুলো হলোঃ
- এখানে যেকোনো ধরনের অ্যাকাউন্ট আপনি করতে পারবেন।
- ফিঙ্গার প্রিন্টের সাহায্যে এখান থেকে টাকা উত্তোলনের সুবিধা পাবেন।
- ডাচ বাংলা ব্যাংকের যেকোনো উপশাখা বা শাখাতে আপনি 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারবেন।
- টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রেও ডাচ বাংলা ব্যাংকের উপ-শাখা ও শাখা গুলোতে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতে পারবেন।
- এটিএম কার্ড সেবা নিতে পারবেন।
- চেক এর সেবা নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ ব্যাংক সঞ্চয়পত্রের নতুন নিয়ম
- এখানে ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড সেবা নিতে পারবেন।
- এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা নিতে পারবেন।
- রকেট সেবা নিতে পারবেন।
- মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিতে পারবেন।
- ডিবিবিএল এর ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিল পে করার সুযোগ পাবেন।
এছাড়াও কিন্তু ডাচ-বাংলা ব্যাংকে আরো অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে যেগুলো এখানে
বর্ণিত নেই তবে আপনারা সব সুযোগ সুবিধাই ভোগ করতে পারবেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকে যদি
আপনার একটা একাউন্ট খোলা থাকে তাহলে এই সকল সেবা আপনারা গ্রহণ করতে পারবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক হেড অফিস নাম্বার
ডাচ বাংলা ব্যাংকের হেড অফিস ঢাকার মতিঝিল কমার্শিয়াল এরিয়াতে অবস্থিত। ডাচ
বাংলা ব্যাংকের যে সকল শাখা উপশাখা রয়েছে সেগুলো সবকিছুই মূলত কন্ট্রোল করে থাকে
হেড অফিস। যেটি ঢাকাতে অবস্থিত রয়েছে। ঢাকা হেড অফিসের নাম্বার গুলো হলোঃ
telephone number
- 02223354196 -8
- 02223359229
- 47115155
- 47114795
- (8802) 47110465
- fax number : (8802) 9561889
ডাচ বাংলা ব্যাংক হেল্পলাইন
১৬২১৬ হলো ডাচ বাংলা ব্যাংকের হেল্পলাইন নাম্বার। ডাচ বাংলা ব্যাংকের অন্তর্ভুক্ত
যে সকল সুযোগ সুবিধা এখানে রয়েছে তার থেকে কোন ঝামেলা হওয়ার কথা না। তারপরেও
যদি কখনো কোন ঝামেলায় পড়েন বা অ্যাকাউন্ট জনিত কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে তখন
ডাচ বাংলা ব্যাংকের হেল্পলাইনে ফোন দিয়ে আপনারা আপনাদের সমস্যার সমাধান করে নিতে
পারেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকের মূল শাখা গুলা ২৪ ঘন্টাই সার্ভিস দিয়ে থাকে। এজেন্ট
গুলো তাদের যে শাখা-উপ শাখা রয়েছে সেগুলোতে সার্ভিস থাকে সকাল নয়টা থেকে পাঁচটা
পর্যন্ত।
তবে হেল্পলাইনে সার্ভিস ২৪ ঘন্টায় খোলা থাকে। আপনি যে কোন সমস্যার সমাধানে
হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন দিয়ে সমস্যার সমাধান করে নিতে পারবেন। প্রথমে কল দেওয়ার
পর আপনাকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের সার্ভিস সম্পর্কে বলতে বা পরে এজেন্ট এর সঙ্গে কথা
বলার জন্য আপনাকে জানালে আপনি যদি আগ্রহী হন তাহলে এজেন্টের সাথে কথা বলার জন্য
অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলবে।
আগেকার দিনে এজেন্টের সাথে কথা বলার জন্য ২ থেকে ৩ টাকা করে মূল ব্যালেন্স থেকে
কেটে নিত। তবে এখনকার দিনে এটা একদম ফ্রি হয়ে গেছে। আপনি যেকোনো সমস্যার সমাধান
নিতে হেল্পলাইনে কল করলে ফ্রি এজেন্টের সাথে কথা বলতে পারবেন এবং আপনার সমস্যার
সমাধান করে নিতে পারবেন।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
উপরে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি সম্পর্কিত অনেক তথ্য আমরা জানলাম। আমরা অনেকেই ডাচ বাংলা
ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা বা কি কি সেবা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতাম না। কিন্তু
আজকের পর এই নিয়ে আমাদের আর কোন ঝামেলা থাকবে বলে মনে হয় না। যেকোনো সমস্যায়
হেল্প লাইনে ফোন দিয়ে আপনার নিজেরাই সমস্যার সমাধান করে নিতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url