ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা - সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

শীতকালে ঠান্ডা জ্বরের প্রভাব বেশি হয় কারণ শীতকালে লোকজন ঘরের ভিতরে বেশি সময় কাটায় এবং ভাইরাস ছড়ানোর সুযোগ বেশি থাকে এবং দূষিত বাতাসে শ্বাস নেওয়াও ঠান্ডা জ্বরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই আজ আমরা ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা
তাছাড়া ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল থাকে তাদের ঠান্ডা জ্বর বেশি হতে পারে ঠান্ডা জ্বর একটি সাধারণ অসুখ  ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা যা সাধারণত ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে হয় এই রোগে সাধারণত নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গলা ব্যথা, কাশি এবং জ্বর দেখা দেয়।

পোস্টের সূচিপত্রঃ ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা - সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় জানুন

ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা

সুপ্রিয় পাঠক সকল আজ আমরা একটি সাধারণ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো। এতক্ষণে হয়তো আর্টিকেলর শিরোনাম এবং টাইটেল দেখে তা অবগত হয়েছেন। হ্যা আজ আলোচনা করবো সকলের সাধারণ সমস্যা ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে। চলুন তাহলে আমরা সেসব মুক্তি উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নিই। ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা আছে যা মেনে চললে সাধারণত এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সেগুলো হলোঃ
  • শরীরকে সুস্থ করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি সাথে পরিষ্কার পরিছিন্নতা ও থাকতে হবে।
  • তরল খাবার যেমন, গরম স্যুপ, চা, কমলালেবুর রস ইত্যাদি পান করুন এগুলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।
  • আদা চা, আদা কুচি কুচি করে গরম চা এর সাথে খেলে গলা ব্যথা কমবে।
  • মধু,মধু গলা ব্যথা এবং কাশি কমাতে সাহায্য করে।
  • তুলসী পাতা, তুলসী পাতা অনেক ধরনের জীবানু থেকে লড়াই করতে সহায়তা করে।
  • লবণ পানি,গরম লবণ পানি গার্গল করলে গলা ব্যথা কমবে।
  • ভাপ,গরম পানির বাষ্প নাসায় নেওয়া সর্দি এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে।

সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক সকল আমরা ইতিমধ্যে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদের মাধ্যমে ঠান্ডা জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা শেষ করেছি এখন আমরা জানবো কিভাবে সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় সমূহ নিয়ে। চলুন তাহলে আমরা সেসব উপায় সমূহ জেনে নিই। 
সর্দি হওয়ার পরে অনেকেই ওষুধের দিকে ছুটে যান। কিন্তু অনেক কার্যকর ঘরোয়া উপায় আছে যা সর্দি থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। সর্দি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় গুলো হলোঃ
  • গরম পানি-দিনে অনেকবার গরম পানি পান করুন। এতে শরীরের তাপমাত্রা বজায় থাকে এবং নাক বন্ধ থাকলে তা খুলে যায়।
  • লেবু-মধু- এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে খান। এটি ইমিউনিটি বাড়ায় এবং গলা ব্যথা কমায়।
  • হলুদ দুধ-এক গ্লাস গরম দুধে হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে খান। হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ থাকে যা গলা ব্যথা কমায়।
  • স্যুপ-গরম স্যুপ খাওয়া শরীরকে আরাম দেয় এবং নাক বন্ধ থাকলে তা খুলে যায়।
  • ভাপ নেওয়া-একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার উপর মাথা ঢাকিয়ে ভাপ নিন। এতে নাক বন্ধ থাকলে তা খুলে যায়।
  • বিশ্রাম-সর্দি হলে যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম নিন।
  • এবং আমাদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত যদি সর্দি দীর্ঘদিন ধরে থাকে বা জ্বর, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অতিরিক্ত কাশি কমানোর ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক সকল কাশি একটি ভয়ানক সমস্যার কারণ হতে পারে তাই এটি নিয়ে অবহেলা করা আমাদের মোটেই অবহেলা করা উচিত না। তাই আজ আমরা জানবো যদি অতিরিক্ত কাশি কমানোর ঘরোয়া উপায় সমূহ গুলো জেনে নিবো। কোন কোন ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে আমরা সহজেই কাশি কমাতে পারি তা সব তথ্য সমূহ গুলো জানবো তাই চলুন আমরা আরদেরি না করে সেসব তথ্য গুলো জেনে নিই।
অতিরিক্ত কাশি কমানোর জন্য অনেকগুলি ঘরোয়া উপায় আছে। এখানে কয়েকটি জনপ্রিয় এবং কার্যকরী উপায় হলোঃ
মধুঃ মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং ক্ষত নিরাময়ের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গলা ব্যথা প্রশমিত করতে সহায়তা করতে পারে। গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।

গরম পানিতে লবনঃ গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলি করা বা নোনা জল কুসুম গরম করে খেলে ও কাশি থেকে স্বস্থি পাওয়া যায়।

তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতার রস শ্বাসযন্ত্রের যে কোনো সমস্যা মেটাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এই পাতার অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল যৌগ শুকনো কাশি কমাতে সহায়তা করে। মধুর সঙ্গে কয়েকটি তুলসী পাতা এমনি চিবিয়ে খেতে পারেন।

হলুদঃ হলুদের প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব শ্বাসনালীতে জ্বালা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং 1/8 চা চামচ কালো মরিচ ঠাণ্ডা কমলার রস বা একটি গরম চা পান করার জন্য মিশিয়ে নিন বা এক গ্লাস দুধের সাথে ১ চামচ হলুদ গুড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন তাতেই কাশি কম হতে পারে।

যদি কাশি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্য কোনো উপসর্গের সাথে থাকে ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে ও না কমে তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।মনে রাখবেন, এই ঘরোয়া উপায়গুলি সবসময় কার্যকরী হতে পারে না প্রত্যেক ব্যক্তির শরীর ভিন্ন।

ঠান্ডা লাগলে ঘরোয়া উপায়

ঠান্ডা লাগলে শরীরে নানার অস্বস্থি হয় এর তীব্রতা কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় আছে অনেকের জ্বর গলা ব্যথার মত সমস্যা ও হয় সেক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু উপায় বা পদ্ধতি ব্যবহার করলে শরীরে ভালো লাগবে। প্রথমেই পরিষ্কার পরিছিন্ন ভালো কোন গরম কাপর পরিধান করতে হবে যাতে বাহিরের ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম করতে হবে তারপর স্যুপ,গরম জল,হলুদ মিশ্রিত দুধ,রং চা বা মধু খেতে পারেন এবং লেবু ও আদা মিশিয়ে চা খেতে পারেন। 
কমলালেবু খেতে পারেন এটা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে কারণ কমলালেবু তে রয়েছে ভিটামিন সি ও জিংক এবং ভিটামিন সি ও জিংক শরীরে ঠান্ডা লাগা রুখতে সাহায্য করে ঠান্ডা লাগলে ঘরোয়া ভাবে এই পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করলে স্বস্তি পেতে পারেন তাছাড়া ও কিছু নিয়ম আছে প্রত্যহিক জীবনে নিয়ম মেনে চললে সাধারণ ভাবে রোগ জীবাণু থেকে মুক্তি পাবেন।
  • নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন।
  • ভিড় এড়িয়ে চলুন।
  • সুষম খাবার খান।
  • পর্যাপ্ত ঘুম নিন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন

    ঠান্ডা লাগলে কি খাওয়া উচিত

    ঠান্ডা লাগলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। এই মৌসুমে আপনার জন্য কিছু নতুন এবং কার্যকরী খাবারের সুপারিশ আছে সেগুলোঠান্ডা লাগলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত খাবারগুলো খাওয়া যেতে পারে যেমন,
    • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: কমলা, লেবু, জাম্বুরা ইত্যাদি। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
    • আদা: আদা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহ বিরোধী এবং গলা ব্যথা, কাশি উপশম করতে সাহায্য করে। গরম আদা চা খেতে পারেন।
    • মধু: মধু কাশি এবং গলা জ্বালা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আদার সাথে মিশিয়ে খেলে আরও ভালো ফল পাবেন।
    • রসুন: রসুন অনেক ভালো শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য ।
    • চিকেন স্যুপ: চিকেন স্যুপ শরীরকে হাইড্রেট করে এবং পুষ্টি জোগায়। এটি ঠান্ডার সময় শরীরকে আরাম দেয়।
    • সবজি স্যুপ: বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ জোগায়।
    • তরল খাবার: জল, লেবু পানি, ডাবের জল ইত্যাদি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
    • সুপ বা তরল খাবারে মসলা: হলুদ, কালো মরিচ, দারচিনি ইত্যাদি মসলা শরীরের জন্য উপকারী।
    এই তালিকাটি কেবল একটি সুপারিশ। আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবারের তালিকা পরিবর্তন করতে পারেন। কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

    শেষ মন্তব্য

    ঠান্ডা লাগা সাধারণত নিজে থেকে ভালো হয়ে যায়। তবে, যদি লক্ষণগুলি গুরুতর হয় বা দীর্ঘদিন থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ মাঝে মাঝে শরীরে বড় কোন রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধলে ও
    সব সময় ঠান্ডা জ্বর আসতে পারে সেজন্য আগে রোগ নির্ণয় করতে হবে কেন হয় বা কখন হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে তারপর ঘরোয়া কিছু উপায় ব্যবহার করার পর ও যদি শরীর সুস্থ অনুভব না হয় সে ক্ষেত্রে এই দিক গুলো ও মাথায় রাখতে হবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার মাধ্যমে আপনি ঠান্ডা লাগা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। ঠান্ডা লাগা, জ্বর এবং কাশির জন্য কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। ওষুধ সাধারণত উপসর্গ কমাতে ব্যবহৃত হয় যে কোনো ওষুধ সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি আপনার কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকে, তাহলে ঠান্ডা লাগার সময় চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url