শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আমরা সকলে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। শীত কালটা আমার
অনেক প্রিয়, কেন জানেন? শীতের সকালে চারিদিকটা কি সুন্দর কুয়াশা মাখা থাকে, কত্ত
নিত্য নতুন সবজি পাওয়া যায়, শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার, শীতে সকালে খেজুরের রস খাওয়ার যে ব্যাপারটা, ওয়াও
ভাবতেই মনটা খুশিতে ভরে উঠছে। আমরা মতো এমন অনেকেই আছে যারা অপেক্ষায় থাকে শীতকাল
কবে আসবে আর তারা ইচ্ছামত উপভোগ করতে পারবে।
শীতকালে অতিরিক্ত শীত পড়ার কারণে অনেকে আবার দূর্বল হয়ে পড়ে। এসব দূর্বলতা থেকে
পরিত্রাণ পেতে পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন । মিষ্টি আলু, জিরা ভেজানো পানি, ডাবের
পানি, কম্বু চা, আখের রস, ছাতুর শরবত ইত্যাদি। এছাড়াও নিম্নে আমরা শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার কিছু বিষয়
সম্পর্কে আলোচনা করবো। যার মধ্যে থাকছে শীতকালে শক্তি বাড়ানোর জন্য খাবার,
শীতকালের জন্য পুষ্টিকর নাস্তা, শীতকালে আদা চা খাওয়ার উপকারীতা, খেজুরের রস
খাওয়ার উপকারিতা, ১০ টি শীতকালীন সবজি ইত্যাদি। বিস্তারিত জানতে অবশ্যই সাথে
থাকতে হবে।
পোস্টের সূচিপত্রঃশীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার
শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার
শীতকালে কেন জানি না অনেক ক্লান্ত লাগে । হাত পা তো নড়তেই চাই না। হাঁটা চলা
করতেও ইচ্ছে করে না শরীরটা কেমন যেন হয়ে যাই। যারা মজুরি খাটে, স্কুল কলেজে যায়
বা অফিসে যায় তাদের এই শীতের সকালে উঠে ফ্রেশ হতে, খাওয়া দাওয়া করতে, গোসল করতে
অনেক বেশি কষ্ট হয়ে যায়। শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার অনেক বেশি আলসেমি লাগে কম্বল ছেড়ে উঠতে। শরীরের মধ্যে
পুষ্টি অভাব দেখা দিলে ও আলসেমিটা বেশি চাপে চোখে,,চোখ যেন খুলতেই ইচ্ছে করে না ।
তাই সবার উচিৎ প্রতিদিনের খাবারে কিছু প্রাকৃতিক পানিয়ও রাখার যেটা থেকে শরীরটা
থাকে তরতাজা ।
শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার যেমন জিরা পানি,আখের রস, ডাবের পানি, ছাতুর শরবত, কম্বু চা, ইত্যাদি। তৃষ্ণা পেলে
জিরার পানি খেতে পারেন যেটা খুব ভালে সতেজ একটা অনুভূতি দিয়ে থাকে। এটির ফলে হজম
শক্তি বেড়ে যায়। আখের রসে শুধু যে তৃষ্ণা মিটায় তা নাহ,, এইটা স্বাস্থ্যের পক্ষে
ও অনেক উপকারী। এটায় রয়েছে আয়রন,পটাশিয়াম এবং প্রোটিনের মতো পুষ্টি জাতীয় উপাদান।
এইটা অনেক ভালো একটা এনার্জি drink. ডাব এর পানি শক্তি বৃদ্ধি করে। ডাবে থাকে ৯৫
ভাগ পানি ।
শীতকালের জন্য শক্তি বাড়ানোর খাবার নারিকেলের পানি স্বাস্থ্যর দিক দিয়ে অনেক ভালো একটা বিকল্প। এটাতে আছে
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট,,এনজাইম,, অ্যামিনো এসিড,,বি কমপ্লেক্স ভিটামিন, ভিটামিন C
সহ আরো অনেক পুষ্টির উপাদান।গ্রীণ টি বা ব্লাক টি এর মতো কম্বু চা ও অনেক উপকারী।
ছাতুর শরবত অনেক টা ইসব গুলির মতোন হজম শক্তি বাড়িয়ে থাকে। শরীরে জ্বালা ও
অস্থিরতা কম করে, খাবারের প্রতি রুচি বাড়ায়।
শীতকালের জন্য পুষ্টিকর নাস্তা
সারা দিন আপনি যা ই খান না কেন সকালের নাস্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নাই। আর
শীতকালের সকালে খাবারের মধ্যে রাখতে পারবেন বৈচিত্র্য কিছু নাস্তা । তার জন্য
তালিকাতে রাখিতে পারেন কিছুই শাক সবজি এবং ফল-মূল। শীতকালীন সবজি এবং ফলের জন্যই
অনেক মানুষ সারাটা বছর জুড়ে অপেক্ষায় থাকে ।
- শীত কালের সকালে আপনি খেতে পারেন আদা দিয়ে চা, তুলসি-টি, গ্রিণ- টি, ব্লাক- টি ইত্যাদি। এতে করে শরীর থাকে সতেজ।
- ভিটামিন b এবং ফাইবার আছে লাল আটাতে। ফাইবার কোষ্ঠ কাঠিন্যতা দূরকরে শরীরের মধ্যে উষ্ণ একটা ভাব এনে দিয়ে থাকে । আর ভিটামিন b শরীরকে উষ্ণ করে রাখে।
- ডিম খাইতে কম বেশি আমরা সকলে ভালবাসি। সেটা হোক সিদ্ধ অথবা ভাজি প্রোটিনে ভরপুর এই খাবারটি প্রত্যেক দিন সকাল এর নাস্তায় রাখার চেষ্টা করবেন । ডিমের মধ্যে প্রোটিন বাদেও আছে ভিটামিন E, ওমেগা-3 ও ক্যালসিয়াম।
- ভেজিটেবল মিক্সড এ প্রায় সকল রকমের মিনারেল, ভিটামিন,, ফাইবার ইত্যাদি থাকে যেটা বিভিন্ন ধরনের রোগের সাথে লড়ায় করিতে পারে।
- প্রতিদিন ১ বার করে হলেও শীত এর দিনে যা হয় এক রকমের স্যুপ খাবেন। এতে শরীর এর শক্তি সৌন্দর্য দুটোই বাড়ায়।
- এছাড়া ও মৌসুমি ফল, মধু,দুধ, ওটস,ব্রাউন ব্রেড, মাখন ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার নাস্তায় খেতে পারেন।
শীতকালে আদা চা খাওয়ার উপকারিতা
গরম চলে যাওয়ার শেষ মূহুর্তে যখন শীত পড়া শুরু করে তখন বেশির ভাগ মানুষের ই মোশন
সিকনেস এর সমস্যা শুরু হয়ে যায়। আর তাই সেই সমস্যার সমাধান হিসেবে আদা দিয়ে চা
খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। শীতকালের ওই ঠান্ডা আবহাওয়াতে এই চা খাওয়া বিভিন্ন
উপকারীতা আছে।যেমনঃ
- ১. প্রাচীনকাল থেকে আদার রস ঔষধ হিসেবে কাজ করে আসছে। এটা কাশি -ফ্লু ও ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
- ২. আদা দিয়ে চা খেলে পেটের ব্যাথা কমে যায়।
- ৩. আদা রস শরীর এর রক্তের সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
- ৪. বাত এর ব্যথা কমিয়ে দেয়।
- ৫. হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়।
- ৬. বমি বমি ভাব দূর করিয়ে দেয়।
- ৭. রোগের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
- ৮. মুখের ভিতর পরিষ্কার করিয়ে দেয়।
শীতকালে আদা দিয়ে চা খাওয়া অনেক উপকারী দিক রয়েছে। এই জন্য সকলের উচিৎ আদা দিয়ে
চা খাওয়ার অভ্যাস করা।
শীতকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
শীত কালে সুস্থ থাকার জন্য নিয়ম করে খেজুরের রস খেতে পারেন। খেজুরের মধ্যে আছে
উপকারি তেল, সালফার, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, সালফার, পটাশিয়াম,কপার, আয়রন, ফস-ফরাস,
ভিটামিন b6, ভিটামিন k, সহ আরো নানা বিধ খনীজ উপাদা আছে। এটা ছাড়া ও খেজুর শরীর
এর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। যেমনঃ
- একের অধিক গবেষণা করে প্রমাণ করা হয়েছে যে খেজুরের মধ্যে থাকা ডায়েটরি ফাইবার,, এন্টিঅক্সিডেন্ট,, পটাশিয়াম,, ও নানা রকম উপকার কারী উপাদান যা শরীরের মধ্যে প্রবেশ করিবার পরে ব্রেনসেল এর ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
- খেজুরের মধ্যে থাকা ভিটামিন C এবং ভিটামিন D ত্বকের মধ্যকার বলি রেখা দূর করিয়ে প্রাণবন্তর ও উজ্জ্বল করিয়ে দেয়।
- নিয়ম করে খেজুর খাইলে শরীর এর খারাপ যে কোলেস্টেরল থাকে সেটার মাত্রা কমে যায় যার ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো ভয়ংকর আশঙ্কা কমে যায়।
- যেহুতু খেজুরে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকে সেই জন্য নিয়মিত এ ফল খাইলে পেটের কোনো রোগ হয়না।
আরো পড়ুনঃ শিশুর মানসিক বিকাশের উপায় জেনে নিন
- দিনে ৩ টা করে খেজুর খাইলে শরীরের এই রমক কিছু উপাদান এর মাত্রা বৃদ্ধি করে দেয় যেটার প্রভাবে ক্যান্সারের মত রোগ হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।
- খেজুর কিন্তু দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখে ও চোখ এর রোগ এর প্রকোপ কমিয়ে দেয়।
১০ টি শীতকালীন সবজির
শীতের সময় এই যে শীতকালীন সবজি গুলা অনেক অনেক পছন্দ করেন এমন মানুষের অভাব নাই।
তার মধ্যে আমিও একজন। শীতকালীন সবজি, শীতের এই মিষ্টি আবহাওয়া, কুয়াশাচ্ছন্ন
পরিবেশ আমাকে যাস্ট মুগ্ধ করে দেয়। শীতের সময়ে নিত্য নতুন সবজি দেখতে পাওয়া যায়
বাজার ঘাটে আনাচে-কানাচেতে। এরই মধ্যে ১০ টি শীতকালীন সবজির নাম উল্লেখ করা হলো:
- ১. লালশাক ।
- ২. পালংশাক ।
- ৩. মূলা ।
- ৪. ফুলকপি ।
- ৫. বাঁধাকপি ।
- ৬. ওলকপি ।
- ৭. শসা, টমেটো ।
- ৮. ধনীয়া পাতা,পেয়াজ পাতা ।
- ৯. গাজর, ব্রকলি ।
- ১০. লাউ, শিম ইত্যাদি সহ আরো অনেক সবিজই কিন্তু পাওয়া যায়। খাদ্য উপাদান এর মধ্যে মিনারেলস ও ভিটামিনের অন্য তম উৎস হলো ফলমূল ও শাক-সবজি।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরে শীতকালীন ফলমূল, সবজি সহ আরো অনেক বিষয়ে আমরা আজ জানলাম। শীতকালে আদা দিয়ে
চা খাওয়ার উপকারিতা, শীত কালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, পুষ্টিকর নাস্তা এসব
সম্পর্কে আমরা আগে থেকে অবগত না থাকলেও এখন বিস্তারিত জানার পর চেষ্টা করবো
এগুলো নিয়ম করে খাওয়ার। তাহলে আমরা সুস্থতার সাথেই শীতকালটাকে উপভোগ করতে পারবো।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url