ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি - ফেসবুক রিলস কি
সুপ্রিয় পাঠক উপরের টাইটেলটি দেখেই বুঝতে পারছেন আজকের আলোচনার বিষয় মূলত কি?
তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই। আজকের আলোচনায় থাকছে ফেসবুক রিলস ফেসবুক রিলস
ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি। আপনি যদি একজন ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হতে চান
তাহলে আপনাকে সম্পর্কিত সকল তথ্য জানাতে হবে। তাই আপনি ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন
পলিসি সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
বর্তমান সময়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অভাব নাই। যেমনঃ ফেসবুক রিলস
মনিটাইজেশন পলিসি ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব,টুইটার ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমান
সময়ে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। এখনকার সময়ে ফেসবুক চালায় না এমন মানুষ নেই
বললেই চলে।
পোস্টেরসূচিপত্রঃ ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি - ফেসবুক রিলস কি
ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি - ফেসবুক রিলস কি
ফেসবুক রিয়েলস মূলত ছোট আকারের ভিডিও। ছোট আকারের ভিডিও তৈরি করার কারণে খুব কম
সময়ের জনপ্রিয়তা লাভ করেছে টিকটক। ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি এ কারণে
অনেকেই মনে করে রিলসের মত ফিচারই এর জনপ্রিয়তার মূল কারণ। পরে ফেসবুক,ইউটিউব এর
মত জনপ্রিয় মাধ্যমগুলো একই পথ অনুসরণ করছে। যখন প্রথম ফেসবুকে রিলসের প্রচলন
শুরু হয় তখন সর্বোচ্চ ৬০ সেকেন্ডের রিলস ভিডিও তৈরি করা যেত কিন্তু এখন ভিডিও
দৈর্ঘ্য বেড়ে সর্বোচ্চ দেড় মিনিটের রিলস ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করা যায়। ফেসবুক
রিলস মনিটাইজ করতে হলে ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন করার জন্য যেসব নিয়ম নীতিমালা/
শর্ত রয়েছে সেগুলো অনুসরণ করতে হবে।নিম্নে ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি
শর্তগুলো তুলে ধরা হলোঃ
- ১. কমপক্ষে ফেসবুক পেজে পাঁচ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে।
- ২. দুই মাসে ৬০ হাজার মিনিট ভিউ থাকতে হবে।
- ৩. ফেসবুক পেজে কমপক্ষে পাঁচটি একটিভ ভিডিও থাকতে হবে। তবে অন্যের ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা যাবে না। পোস্ট করলে ভিডিওতে কপিরাইট ইস্যু আসবে যার কারণে আপনি মনিটাইজেশন পাবেন না। কিন্তু আপনি অন্যের ভিডিও সম্পাদন করে নিজে ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করতে পারেন। এসব নিয়ম নীতিমালা মেনে চলে ক্রাইটেরিয়া/শর্ত গুলো সম্পন্ন করার পর আপনি মনিটাইজেশন এর জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
ফেসবুক রিলস থেকে ইনকাম
ফেসবুক, ইউটুপ থেকে আয় করার সুযোগ থাকায় দিন দিন ফেসবুক,ইউটুব কন্টেন্ট
ক্রিয়েটরদের সংখ্যা বেড়েই চলছে।ফেসবুক থেকে ইনকাম করার জন্য ক্রিকেটারদের কিছু
ক্রাইটেরিয়া/শর্ত পূরণ করতে হয়। এই শর্ত পূরণ করার পর ফেসবুক তাকে মনিটাইজেশন
দেয়। ফেসবুক রিলস ভিডিও দৈঘ্য সর্বোচ্চ ৯০ সেকেন্ড হতে পারে। কিছু দিন আগপর্যন্ত
বোনাস প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারত।ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের উৎসাহিত
করতে এই নিয়ম চালু করা হয়।ভিডিওতে, ভিউ, শেয়ার, এনগেজমেন্ট ইত্যাদি শর্ত পূরণের
মাধ্যমে তারা বোনাস পেত।
অর্থাৎ ফেসবুক তাদের ভিডিও কোয়ালিটি এবং দর্শকের আগ্রহের উপর ভিত্তি করে কন্টেন্ট
ক্রিয়েটরদের বোনাস প্রোগ্রামের অফার করত। আপনি যে বিষয়ে নিয়ে ভালো বোঝেন সে
বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুক পেজে পোস্ট করতে পারেন। আপনি যদি ফানি ভিডিও নিয়ে
কাজ করতে চান তাহলে আপনার পেজে সব ফানি ফানি ভিডিও পোস্ট করতে হবে। আপনাকে ভিডিও
গুলো পোস্ট করার আগে ভিডিওটাকে কোয়ালেটি সম্পন্ন করে তুলতে হবে।
ভিডিওটাকে কিছু এডিটিং অ্যাপস ব্যবহার করার মাধ্যমে কোয়ালেটি সম্পন্ন করে তুলতে
পারবেন। যেমন: capcut,Kingmaster,inshot ইত্যাদি। এডিটিং অ্যাপস গুলো ব্যবহারের
মাধ্যমে ভালো কোয়ালিটির ভিডিও তৈরি করা করে খুবই তাড়াতাড়ি ফেসবুক মনিটাইজেশন
পাওয়া সম্ভব।
ফেসবুক মনিটাইজেশন টুল
ফেসবুকে ভিডিও দেখা, নিউজ পড়া সহ ফেসবুক মনিটাইজেশন করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা
যায়। আর ফেজবুক মনিটাইজেশনের করার জন্য কিছু টুল রয়েছে। যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে
আপনি ইনকাম করতে পারবেন।নিম্নে টুল গুলো এবং টুলস এর ব্যবহার তুলে ধরা হলোঃ-
- ১.স্টারসঃ যখন আপনি লাইভ স্ট্রিমিং করবেন তখন আপনার দর্শকরা আপনাকে স্টার দিয়ে সমর্থন জানাতে পারে।দর্শকরা স্টার দিয়ে আপনাকে আর্থিক ভাবে সহায়তা করবে আর আপনি এই স্টার গুলো বিক্রি করে অর্থ করতে পারবেন।
- ২.রিল বিজ্ঞাপনঃ এই টুল টির মাধ্যমে ফেসবুক আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেয়। বিজ্ঞাপন দাতারা অর্থ প্রদান করে। সেই অর্থের কিছু অংশ ফেসবুক আপনাকে প্রদান করে।
- ৩.লাইভ বিজ্ঞাপনঃ এটি লাইভ স্ট্রিমিং বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়।যেমনঃ সোশ্যালমিডিয়া, টিভি।
- ৪.ইন স্ট্রিম বিজ্ঞাপনঃ এই টুলটির মাধ্যমে আপনার ভিডিওতে কিছু সময় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দাতা অর্থ প্রদান করবে facebook সেই অর্থের কিছু পরিমাণ আপনাকে প্রদান করবে।
আরো পড়ুনঃফেসবুক ভেরিফাইড করবেন যেভাবে
- ৫.সাবক্রিপশনঃ আপনার পেজের বিশেষ বিশেষ কন্টেন্ট এর জন্য সাবক্রিপশন ফি নিধারণ করতে পারেন। সাবসক্রাইবার ফি প্রদানের মাধ্যমে বিশেষ কন্টেন্ট উপভোগ করতে পারবে এবং এই ফি সরাসরি আপনার কাছে চলে আসবে কিন্তু কিছু কমিশন ফেসবুক কাটতে পারে।
- এসব টুল গুলোর সুযোগ সুবিধা পেতে হলে আপনাকে সবার আগে ফেসবুক মনিটাইজেশন পেতে হবে এবং তাদের দেওয়া নিয়ম নিতি মেনে চলতে হবে।
ফেসবুক রিলস ভিডিওর সাইজ কত
ফেসবুকে রিলস ভিডিও পোস্ট করার জন্য একটি নিদিষ্ট মাপ রয়েছে। তাই আমরা যদি
ফেজবুকে রিলস ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার রিলস
ভিডিও আপলোড করার সঠিক মাপ জানতে হবে। তাই চলুন জেনে নিই।
আকৃতির অনুপাত: রিলসগুলির একটি আকৃতির পরিমাণ 9x16 হতে হবে।
রেজুলেশন: ভিডিওর সর্বোচ্চ রেজুলেশন 1080x1920 কিন্তু সর্বনিম্ন রেজুলেশন
540x960।
ফ্রেম রেট: প্রতি সেকেন্ডে ২4 থেকে 60 সেকেন্ডের ফ্রেম রেট থাকতে হবে।
সময়: ভিডিওস এর সময়কাল সর্বনিম্ন তিন সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ নব্বই সেকেন্ড
পর্যন্ত হতে হবে।কিন্তু ৯০ সেকেন্ডের বেশি হলে রিলস বলে গণ্য হবে না।
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা
আমরা ইতিমধ্য ফেসবুকে একটা রিলস পাবলিশ করতে হলে সেই রিলস ভিডিওর মাপ কেমন হবে
সেটা জেনে গেছি। এখন আমরা জানবো একটা রিলস ভিডিওর কত ভিউ কত টাকা। তাই চলুন
জেনে নিই। একজন ব্যক্তির পেজে কমপক্ষে পাঁচ হাজার ফলোয়ার এবং গত ৬০ দিনে
পাঁচটি ভিডিওতে ৬০ হাজার মিনিট ভিউ থাকতে হবে। তাহলেই আপনি আপনার ভিডিওতে এড
দেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এই অ্যাড থেকে আসা টাকার ৫৫ শতাংশ আপনি এবং ৪৫
শতাংশ ফেজবুক নিবে।
তবে কোন ভিডিও থেকে টাকা পেতে হলে সেই ভিডিওতে অন্তত ১০০০ ভিউ থাকা লাগবে।
এছাড়াও ফেজবুক থেকে ইনকামের নতুন একটা মাধ্যম হলো একজন ব্যবহারকারী রিলস দেখার
সময় আপনার আপনার ভিডিওতে স্টার দিতে পারে। এই এস্টার গুলো বিক্রি করে অর্থ
পাবেন। প্রতি ১০০ স্টারের মূল্য ১ ডলার। ফেসবুক প্রতি এক হাজার ভিওয়ের জন্য
৮.৭৫ ডলার থেকে ১০ ডলার দিয়ে থাকে।এটি ডিজিটাল নির্মাতাদের জন্য। কিন্তু
ব্যস্ততার উপর ভিত্তি করে টাকার পরিমাণ কম বেশি হতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
আপনি যদি দ্রুত ফেসবুক কন্টেন্ট তৈরি করে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে তাহলে
ফেসবুকের দেওয়া ক্রাইটেরিয়া বা শর্তগুলো অনুসরণ করতে হবে। শর্তগুলো পূরণ করা
কঠিন মনে হতে পারে তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে খুব তাড়াতাড়ি সফলতা অর্জন করা
সম্ভব। উপরিউক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করলে দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারবেন। এতক্ষণ
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url