শীতকালে মাথায় খুশকি দূর করার উপায় - চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
আসসালামু আলাইকুম,সুপ্রিয় পাঠক লেখাটি দেখেই বুঝতে পারছেন আজকের আলোচনার বিষয়
কি? তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই।আজকের আলোচনায় থাকছে শীতকালে মাথার খুশকি দূর
করার জন্য বেশ কিছু টিপস। এই টিপস গুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

পোস্টের সূচিপত্রঃ শীতকালে মাথায় খুশকি দূর করার উপায় - চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
শীতকালে মাথায় খুশকি দূর করার উপায় - চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
- প্রথমে চুল ভিজিয়ে নিন। চুল ভিজিয়ে নেওয়ার পর মাথার ত্বকে দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা ঘষে নিন।তারপর চুল ধুয়ে ফেলুন কিন্তু বেকিং সোডা লাগানোর পর শ্যাম্পু লাগাবেন না।
- মৌরি সমপরিমাণ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন ভালো করে বেটে মাথার ত্বকে এক থেকে দেড় ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ফলে খুশকি দূর হবে।
- শীতকালে মাথার ত্বক বেশি শুষ্ক এবং খুশকি দেখা যায়। তাই দেড় টেবিল চামচ মেথি ও দেড় টেবিল চামচ আমলকী সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন বেটে ফেলুন এবং সাথে দুই-তিন চা-চামচ মধু মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তেরি করুন। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগান যার ফলে খুশকি দূর হবে এবং চুলের পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করবে। এটি পরিমাণ মতো ব্যবহার করতে হবে তা না হলে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
চুলের খুশকি প্রতিরোধের উপায়
নিম্নে চুলের খুশকি প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ-
- সুস্থ জীবন যাপনই খুশি থেকে দূরে রাখতে পারে। সব ধরণের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সুস্থ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন
- চুলের খুশকি নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্যভ্যাসেরপরিবর্তন করতে হবে। মাথার ত্বক ভালো রাখতে প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি খেতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার খুশকি রোধ করতে সহায়তা করে।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ- চুল অপরিষ্কার রাখলে খুশকি বেশি হয়। তাই খুশকি থেকে বাঁচতে হলে চুল পরিষ্কার রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভেজা অবস্থায় চুল বেঁধে রাখা যাবে না এবং ভেজা চুল নিয়ে বাইরে যাওয়া যাবে না। চুলের পানি ভালো করে মুছে ফেলতে হবে এবং ধীরে ধীরে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আচড়ে ফেলতে হবে।
- নিজস্ব চিরুনি ব্যবহার করা। অন্যোর চিরুনি ব্যবহার না করা কারণ অন্যের চিরুনি ব্যবহারের ফলে খুশকিতে সংক্রমিত হতে পারেন।
লেবু দিয়ে খুশকি দূর করার উপায়
অনেক মানুষের মাথায় খুশকি হতে দেখা যায়। সাধারণত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের
দিকে মাথায় খুশকি বেশি হতে দেখা যায়। কারণঃ এই সময়ে আবহাওয়া কখনো রুক্ষ,
কখনো আদ্র থাকে। চুলের স্বাস্থ্যহানির জন্য এই খুশকি দায়ী। যাদের মাথার ত্বক
অপরিষ্কার থাকে তাদের মাথায় খুশকি হতে বেশি দেখা যায়।
তাই, এখন আমরা লেবু দিয়ে কিভাবে খুশকি থেকে মুক্তি পেতে পারি তাই জানবো।এক
গ্লাস পানিতে একটা লেবুর রস ভালো মিশিয়ে নিতে হবে এবং মাথায় ঢেলে দিতে হবে
অথবা একটা লেবুর রস চিপে মাথায় ঢেলে দিতে হবে। ফলে চুল চকচকে এবং সুন্দর হবে।
এলোভেরা দিয়ে খুশকি দূর করার উপায়
এলোভেরা জেল মাথার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এলোভেরায় প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ
থাকে যা মাথার চুলের খুশকি কমায়, ত্বকের চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে এবং
চুলকে হাইড্রেট রাখে। তাই খুশকি থেকে বাঁচতে চাইলে এলোভেরা হেয়ার প্যাক
ব্যবহার করুন।
এলোভেরা হেয়ার প্যাক বানানোর নিয়মঃ এক টেবিল চামচ এলোভেরা জেল, এক
টেবিল চামচ নারকেলের তেল এবং এক চা চামচ মধু একসাথে ভালো মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি
তৈরি হওয়ার পর এটি আপনার মাথার ত্বকে প্রয়োগ করুন এবং কয়েক মিনিট ম্যাসাজ
করুন। ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে দুই দিন
অন্তত এই হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার করুন।ধীরে ধীরে মাথার খুশকি দূর হয়ে যাবে এবং
চুল পড়া বন্ধ হবে।
চিরতরে খুশকি দূর করার শ্যাম্পু
মাথায় খুশকির সমস্যা থাকলে আমাদেরকে ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
কিছু ভালো মানের শ্যাম্পু নাম তুলে ধরা হলো যানআপনার খুশকি দূর করতে সহায়তা
করবেঃ
- ১. ক্লিয়ার হিজাব শ্যাম্পুঃএটি জিংক প্যারিথিয়ন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু। এতে খুশকি দূর করার উপাদান থাকে যা আপনাকে খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে।
- ২. ক্যান্ডিডক্স শ্যাম্পুঃ মাথার ত্বকের ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।যেমন খুশকি এছাড়াও চুলকানির মত সমস্যা থেকে রক্ষা করা।
- ৩. ডাভ কন্ডিশনারঃ এটি এশিয়ার মধ্য জনপ্রিয় একটি শ্যাম্পু। এটি ছেলেদের চুল পড়া, রুক্ষতা এবং শুষ্কতা এসব সমস্যার জন্য অত্যন্ত কার্যকারী।
- ৪. সেলসুন ডেলি অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুঃ এটি খুশকি দূর করে এবং খুশকি সম্পর্কিত চুলকানি সারিয়ে তোলে।
খুশকি দূর করার তেল
বেশিরভাগ মানুষ খুশকি থেকে বাঁচতে শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকে কিন্তু এমন কিছু
তেল আছে যেগুলো ব্যবহার করলে খুশকি থেকে বাঁচতে পারেন। যেসব তেলের মধ্যে
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্লোমেটরি ইত্যাদি থাকে সেগুল খুশকি কমাতে
উপযোগী। কোন তেল গুলো ব্যবহার করে করলে খুশকি কমতে পারে বুঝবো কিভাবে? নিম্নে
খুশকি কমানোর কিছু তেলের নাম তুলে ধরা হলোঃ
- ১.টি ট্রি অয়েলঃশ্যামপুর সাথে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এই তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল থাকে যা খুশকি কমাতে এবং মাথার স্ক্যাল্পের চুলকানি কমাতে সহায়তা করে।
- ২.নারকেল তেলঃনারকেল তেলের মধ্যে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং উপাদান রয়েছে।যার ফলে চুল ঝলমলে উজ্জ্বল থাকে।চুলকে হাইড্রেট রাখে এবং খুশির সমস্যা দূর করে।
- ৩.নিম তেলঃএই তেলের মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান থাকে। যা মাথার খুশকি দূর করতে এবং মাথায় অসস্তি ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ৪.অলিভ অয়েলঃএই তেলের মধ্যে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং উপাদান থাকে। এছাড়াও এটির মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চুলের আদ্রতা বজায় রেখে খুশকির সমস্যা দূর করে।
- ৫.ক্যাস্টর অয়েলঃক্যাস্টর বিনস এর বীজ থেকে ক্যাস্টর তেল তৈরি হয়। এতে তার ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন -ই, প্রোটিন থাকে যাক চুলের জীবাণু রোধ করে এবং খুশকি থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়া চুলের বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
অতিরিক্ত ধুলাবালির কাজ করলে মাথা পরিষ্কার করা উচিত। ভালো করে মাথা পরিষ্কার
না করার কারণেই বেশিরভাগ খুশকি হতে দেখা যায় তাই সব সময় মাথা পরিষ্কার রাখা
উচিত। এছাড়াও খুশকি থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নিজেকে হাইড্রেট রাখতে হবে,বেশি
বেশি পানি পান করতে হবে এবং শীতকালীন শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে। তাছাড়াও
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক, ভিটামিন বি, সপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে।
উপরিউক্ত টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি খুশকি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এতক্ষণ সাথে
থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url