জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন জানুন

জাতীয় পরিচয় পত্রে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য ভুল রয়েছে বা জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইনে চেক করতে চান? অর্থ্যাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান জানুন এই প্রতিবেদনে। আজ আমরা এই প্রতিবেদনে মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্রের সকল সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো। তাই দেরি না করে চোখ রাখুন এই প্রতিবেদনে এবং জানুন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে আপডেট তথ্য।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন
বাংলাদেশে বসবাসরত একজনের বয়ষ যখন ১৮ ( আঠারো) বছর হয় তখন তাকে একজন নাগরিক বলা হয় বা একটি জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়ে থাকে। এটি মূলত বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পাদিত হয়ে থাকে তখন কিছু ব্যাক্তিগত তথ্যের ভুল বা যান্ত্রিক ত্রুটি হয় যেমন নাম ভুল বা বানানের সমস্যা এবং জন্মসাল প্রভৃতি সমস্যা হয়ে থাকে। যাইহোক সকল সমস্যা সমাধান এখন ঘরে বসেই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন অনলাইনে করা সম্ভব। তাই আমাদের শুধু সেসব প্রক্রিয়া গুলো জেনে নিতে হবে তাহলে আমরা খুব সহজেই একটি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে পারবো। তাই বিস্তারিত জানতে নিম্নবর্গের চোখ রাখুন।

পোস্টের সূচিপত্রঃ জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন জানুন

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

প্রিয় পাঠক আজ এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে আমরা খুব একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আলোচনা করবো। আশা করি এতক্ষণে প্রতিবেদনে শিরোনাম দেখে এতক্ষণে বুঝেই গেছেন যে আজ আমরা কি নিয়ে কথা বলবো। যাইহোক আমরা মূল আলোচনায় আসি জাতীয় পরিচয় পত্র একটি দরকারী সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বহন করে। সরকারি সকল কাজে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন পড়বে। 
তাই এটি সম্পাদনে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করা জরুরি একটি। তাই আপনারও যদি জাতীয় পরিচয় পত্রে কোনো রকম ব্যাক্তিগত তথ্য ভুল রয়েছে। তাহলে সেটা কিভাবে সংশোধন করবেন সেসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন। নিম্নে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন তা তুলে ধরা হলোঃ
  • পোর্টালে লগইনজাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল পোর্টালে যান।
  • আপনার NID নম্বর, জন্মতারিখ, এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
  • যদি আপনার ইতোমধ্যে অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে ই-মেইল/মোবাইল নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  • আবেদন ফরম পূরণলগইন করার পর "সংশোধনের জন্য আবেদন" (Apply for Correction) অপশনে ক্লিক করুন।
  • যেসব তথ্য সংশোধন করতে চান, সেগুলো নির্বাচন করুন এবং সঠিক তথ্য পূরণ করুন।
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোডসংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন (যেমন: শিক্ষাগত সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ, পিতার নামের প্রমাণ ইত্যাদি)।
  • ডকুমেন্টগুলির স্ক্যান করা কপি স্পষ্ট এবং ফরম্যাট সঠিক রাখতে হবে।
  • আবেদন ফি জমাকিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের জন্য ফি প্রযোজ্য হতে পারে। ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে।
  • পোর্টালের নির্দেশনা অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা দিন।
  • আবেদন সাবমিটসব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ এবং ডকুমেন্ট আপলোড করার পর আবেদনটি সাবমিট করুন।
  • আবেদন সাবমিট করার পর আপনি একটি আবেদন নম্বর পাবেন, যা পরবর্তীতে আপনার আবেদনের অগ্রগতি ট্র্যাক করতে সহায়ক হবে।
  • সংশোধিত NID গ্রহণসংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনার মোবাইলে বা ই-মেইলে একটি নোটিফিকেশন পাবেন।
  • সংশোধিত NID ডাউনলোড করতে পারবেন অথবা নির্বাচন অফিস থেকে নিতে পারবেন।

সরাসরি আবেদন করার প্রক্রিয়া জানুন 

  • উপজেলা/জেলা নির্বাচন অফিসে যানআপনার নিকটস্থ উপজেলা/জেলা নির্বাচন অফিসে যান।
  • সংশোধনের আবেদন ফরম সংগ্রহ ও পূরণসংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ফরম নির্বাচন অফিস থেকে সংগ্রহ করুন।
  • সঠিক তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করুন এবং ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করুন।
  • ফি পরিশোধকিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের জন্য ফি পরিশোধ করতে হতে পারে। নির্দিষ্ট ফি নির্বাচন অফিসে জমা দিন।
  • সংশোধিত NID সংগ্রহনির্বাচন অফিসে আপনার আবেদনটি প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। নির্ধারিত সময় পর সংশোধিত NID সংগ্রহ করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন চেক করার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আমরা ইতিপূর্বে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদে জেনেছি যে কোন কোন উপায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন পারি। এখন আমরা এই অনুচ্ছেদে জনবো জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন চেক করার নিয়ম। যদি আমরা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করি তাহলে পরক্ষণে অবশ্যই জানতে আগ্রহী হবো যে সেটি সংশোধন ঠিকঠাক ভাবে হলো কিনা। 
আর চেক করার প্রক্রিয়া যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই অনুচ্ছেদটি পড়ুন। আমরা খুব সহজেই কোন উপায়ে সংশোধিত জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করতে পারি। সুতরাং চলুন আমরা এখন সেসব তথ্য সমূহ জেনে নিই।
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যানজাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল পোর্টাল এ যান।
  • আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করুনপোর্টালে লগইন করতে হবে। আপনি যদি আগে অ্যাকাউন্ট তৈরি না করে থাকেন, তাহলে আপনার NID নম্বর, জন্মতারিখ, এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
  • আপনার ই-মেইল বা মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  • আবেদন স্ট্যাটাস চেক করুনলগইন করার পর আপনি "Application Status" বা "আবেদন স্ট্যাটাস" নামক একটি অপশন দেখতে পাবেন।
  • সেখানে ক্লিক করুন, এবং আপনার সংশোধনের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করুন।
  • স্ট্যাটাস দেখুনএখানে আপনি দেখতে পাবেন আপনার আবেদনটি কোন পর্যায়ে আছে, যেমন: "Under Process," "Approved," বা "Rejected"।
  • যদি আবেদনটি অনুমোদিত হয়, তবে সংশোধিত NID কার্ড প্রস্তুত হলে আপনি সেটি ডাউনলোড করতে পারবেন।

মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করা

প্রিয় পাঠক সকল উপরিউক্ত প্রক্রিয়া ব্যতিত যদি আমরা আমাদের মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করতে পারি বা জানতে পারি। তাহলে বিষয়টি কেমন হয় আশাকরি আপনি আমি উপকৃতই হবো। তাই আপনেও যদি এমন তথ্য জানতে আগ্রহী হোন তাহলে জেনে নিন আজকের এই অনুচ্ছেদ। নিম্নবর্গের তথ্য জেনে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যাক্তিগত মোবাইল দিয়েই মিলবে জাতীয় পরিচয় পত্রের সকল তথ্য। তাই চলুন এখন আমরা সেসব তথ্য গুলো জেনে নিই।
মোবাইল নম্বর দিয়ে NID পুনরুদ্ধার করার ধাপসমূহ:
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল পোর্টালে যান:NID সেবা পোর্টালে যান।
  • অ্যাকাউন্ট তৈরি বা লগইন:যদি আপনার আগে থেকেই একটি অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে ই-মেইল/মোবাইল নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  • যদি আপনার অ্যাকাউন্ট না থাকে, তাহলে "Create Account" এ ক্লিক করে আপনার NID নম্বর ছাড়াই মোবাইল নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
  • OTP যাচাইকরণ:অ্যাকাউন্ট তৈরি বা লগইন করার সময়, আপনার মোবাইল নম্বরে একটি OTP (One-Time Password) পাঠানো হবে।
  • এই OTP নম্বরটি পোর্টালে প্রবেশ করিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
  • NID তথ্য দেখুন:লগইন করার পর, আপনার প্রোফাইলে গিয়ে আপনার NID নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দেখতে পারবেন।
  • NID ডাউনলোড বা প্রিন্ট করুন:আপনি চাইলে আপনার NID কার্ডের কপি ডাউনলোড করতে বা প্রিন্ট করতে পারেন।

SMS-এর মাধ্যমে NID নম্বর পুনরুদ্ধারঃ

  • আপনার মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে যান।
  • টাইপ করুন: NID (space) আপনার জন্ম তারিখ (DD-MM-YYYY ফরম্যাটে)।
  • উদাহরণ: NID 15-08-1990
  • পাঠিয়ে দিন 105 নম্বরে।

জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্র কি?
উত্তরঃ জাতীয় পরিচয় পত্র হচ্ছে যে আপনি একজন রাষ্ট্রে বসবাসকারী নাগরিকত্ব রয়েছে তার প্রমাণ বহর করে। এটি সকলের জন্যই বাধ্যতা মূলক নথি এবং যেটির মাধ্যমে আপনি দেশের সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন।

প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করতে কি কি লাগে?
উত্তরঃ বর্তমান যেসব ডকুমেন্ট দ্বারা আপনি সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করতে পারবেন তা হলোঃ
  • জন্ম নিবন্ধন সনদ।
  • প্রিতা মাতার ভোটার কার্ড।
  • রক্তের সনদ।
  • শিক্ষা সনদ।
  • নাগরিক সনদ।
  • অঙ্গিকারনামা।
  • শেষে nid wallet দিয়ে নিজস্ব ফেস নিশ্চিত করুন।
প্রশ্নঃজাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করতে কী কী প্রয়োজন?
উত্তরঃ জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করতে আপনার NID নম্বর এবং জন্মতারিখ প্রয়োজন হবে। অনলাইনে যাচাই করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল পোর্টালে লগইন করতে হবে। এছাড়া আপনি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেও যাচাই করতে পারেন।

প্রশ্নঃঅনলাইনে NID যাচাই করার প্রক্রিয়া কী?
উত্তরঃপ্রথমে জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।আপনার NID নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে লগইন করুন বা অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। সেখান থেকে আপনি আপনার পরিচয়পত্র যাচাই করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পাবেন।

প্রশ্নঃকিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ডাউনলোড করতে পারি?
উত্তরঃ অনলাইনে লগইন করার পর, আপনার প্রোফাইল থেকে NID কপির একটি ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। এটি একটি ভেরিফাইড কপি হবে, যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রশ্নঃমোবাইল নম্বর দিয়ে NID যাচাই করা সম্ভব কিনা?
উত্তরঃ সরাসরি মোবাইল নম্বর দিয়ে NID যাচাই করা সম্ভব নয়, তবে আপনি NID নম্বর পুনরুদ্ধার করতে এবং কিছু ভেরিফিকেশন কার্যক্রম পরিচালনা করতে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে পারেন।

প্রশ্নঃNID এর ভেরিফাইড কপি কোথায় ব্যবহার করতে পারি?
উত্তরঃ NID এর ভেরিফাইড কপি বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • পাসপোর্ট আবেদন করার সময়।
  • মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন করতে।
  • সরকারি এবং বেসরকারি চাকরির আবেদনে।
  • যে কোনো ধরনের পরিচয় প্রমাণের জন্য।
প্রশ্নঃজাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করার জন্য ফি লাগে কি?
উত্তরঃ সাধারণত অনলাইনে NID যাচাই করার জন্য কোনো ফি লাগে না। তবে, কিছু বিশেষ পরিষেবার জন্য ফি প্রযোজ্য হতে পারে।

লেখকের শেষ মন্তব্যঃ

আমরা ইতিপূর্বে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদগুলোর মাধ্যমে আশাকরি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে সকল সমস্যা সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছে। বর্তমান সময় আধুনিকতার সময় তাই আপনি সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে তুলুন নিজের কাজ নিজে করুন। জাতীয় পরিচয় পত্র আমরা যে বাংলাদেশী তারি প্রমাণ তাই এখানের সমস্ত তথ্য নির্ভুল রাখা আমাদের দ্বায়িত্ব। পরিশেষে উক্ত তথ্য গুলো নিজে জানুন এবং অপরকে জানার সুযোগ করে দিন আর এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। আবার দেখা হবে নতুন কোনো প্রতিবেদনে এবং আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিটি করুন মূল মনুতে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url