বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি - ভালো এসি চেনার উপায়

এসি বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের একটি চমৎকার আবিষ্কার যা জীবন যাপনে একটি অংশ হয়ে পড়েছে। আগের দশকের তুলনায় বর্তমান সময়ে পৃথিবীর ওজন স্তর ক্ষয় প্রাপ্ত হবার ফলে এবং হাই ট্রোজেন গ্যাস বৃদ্ধি ফলে দিন দিন তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। তাই আমাদের বসবাসের সুবিধার্থে শীততাপনিয়ন্ত্রক বা এসি আমাদের বসবাস জীবন সহজ করে তুলেছে। তাই যদি আপনে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি তা নির্বাচন করতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল পড়ুন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি
বর্তমানে আমাদের এখন প্রতিটি বাসার জন্যই এসি আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এমত অবস্থায় আমাদের সবচেয়ে ভালো এসিটি ক্রয় করতে হলে একটু বিচার বিবেচনা করতে হয়। তাই আজকের আর্টিকেলটি আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সহজতর করে তুলবে কারণ আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি এবং কেনো সেরা তার সমস্ত কিছু অজানা তথ্য জানবো। সুতরাং আমরা আর কথা না বাড়িয়ে চলুন মূল আলোচনা জেনে নিই।

পোস্টের সূচিপত্রঃবাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি - ভালো এসি চেনার উপায়

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি

আমরা কোনো ব্রান্ডকে বা কিসের ভিত্তিতে সেরাটা নির্বাচন করবো। তা সমস্ত কিছু তথ্য আজ এই অনুচ্ছেদে আমরা জানবো। কোন কোন বিষয়ে আপনার সজাগ হতে হবে বা যেভাবে একটি সেরা এসি নির্বাচন করতে আপনার সহজতর হয় তা নিয়েই আজকের আলোচনা থাকছে। যদি আপনেও এমন তথ্যের অনুসন্ধান করেছেন তাহলে আপনার জন্য আজকের আর্টিকেলটিই যথেষ্ট। কারণ আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি তা খুব সহজেই জেনে যাবেন এমন কিছু তথ্য সিয়ার করবো।
তাই চলুন আমরা আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা জেনে নিই। বাংলাদেশে বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) পাওয়া যায়, এবং কোনটি সেরা হবে তা নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন, বাজেট, এবং পছন্দের উপর। তবে কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড এবং মডেল নিচে উল্লেখ করা হলো, বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি যেগুলো তাদের পারফরম্যান্স, শক্তি সাশ্রয়, এবং টেকসইতার জন্য বেশ প্রশংসিত:
  • 1. Generalমডেল: ASGA18FUTB
  • General ব্র্যান্ডটি এয়ার কন্ডিশনারের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত এবং এর পারফরম্যান্স অনেক ভালো। এটি দ্রুত শীতল করতে সক্ষম এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের জন্য প্রসিদ্ধ।
  • বৈশিষ্ট্য: ইনভার্টার প্রযুক্তি, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, শক্তি সাশ্রয়ী।
  • 2. Mitsubishiমডেল: MS-GK18VA
  • Mitsubishi ব্র্যান্ডের এসিগুলোও খুব জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত। এটি শক্তি সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • বৈশিষ্ট্য: কমপ্যাক্ট ডিজাইন, শক্তি সাশ্রয়ী, দ্রুত শীতল।
  • 3. LGমডেল: Dual Inverter
  • LG এর ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিগুলো বেশ জনপ্রিয়। এটি শক্তি সাশ্রয়ী এবং টেকসই পারফরম্যান্সের জন্য প্রশংসিত।
  • বৈশিষ্ট্য: ডুয়াল ইনভার্টার কমপ্রেসার, স্মার্ট ডায়াগনোসিস, নিম্ন শব্দ।
  • 4. Samsungমডেল: AR18TY5QAWKN
  • Samsung এর এসিগুলো ডিজাইন এবং পারফরম্যান্সের জন্য পরিচিত। এটি শক্তি সাশ্রয়ী এবং ইকো-ফ্রেন্ডলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
  • বৈশিষ্ট্য: ডুয়াল ইনভার্টার, স্মার্ট কন্ট্রোল, ভালো এয়ার ফিল্ট্রেশন সিস্টেম।
  • 5. Greeমডেল: GREE GS-18MU410
  • Gree ব্র্যান্ডের এসিগুলো বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে কারণ এগুলো উচ্চ গুণমানের এবং সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।
  • বৈশিষ্ট্য: শক্তি সাশ্রয়ী, স্থিতিশীল পারফরম্যান্স, ইনভার্টার প্রযুক্তি।
  • 6. Daikinমডেল: FTKH35
  • Daikin ব্র্যান্ডের এসিগুলো বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এবং বিশেষ করে তাদের শক্তি সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্সের জন্য পরিচিত।
  • বৈশিষ্ট্য: ইনভার্টার প্রযুক্তি, ন্যানো জি ফিল্টারেশন, ইকো মোড।
  • 7. Waltonমডেল: WSI-KRYSTALINE-18A
  • বাংলাদেশি ব্র্যান্ড Walton-এর এসিগুলো স্থানীয় বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায় এবং বেশ ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • বৈশিষ্ট্য: ইনভার্টার প্রযুক্তি, শক্তি সাশ্রয়ী, স্মার্ট কন্ট্রোল।
আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এসব ব্র্যান্ডের মধ্যে যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারেন। এসি কেনার সময় কিছু বিষয় যেমন ইনভার্টার প্রযুক্তি, শক্তি সাশ্রয় ক্ষমতা, এবং পরিষেবা কেন্দ্রের উপস্থিতি বিবেচনা করা উচিত।

ভালো এসি চেনার উপায়

আমরা ইতিপূর্বে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি তা জেনেছি। এখন আমরা এই অনুচ্ছেদে মাধ্যমে জানবো একটি ভালো এসি চেনার উপায়। যদি আপনি এখনও ভালো এসি কোন কোন বিষয়ে জেনে নির্বাচন করবেন তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন। তাহলে বিষয়টি সহজ করতে এই অনুচ্ছেদেটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 
এসি ক্রয় করার পূর্বে একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে ভালো এসি চেনার উপায় কোনটি তা নিয়ে সংশয়। তাই আজ কিছু অজানা তথ্য জেনে নিই এবং খুব সহজেই ভালো এসি ক্রয় করুন। চলুন এখন আমরা মূল আলোচনা জেনে নেওয়া যাক। ভালো এসি (এয়ার কন্ডিশনার) চেনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন। নিচে ভালো এসি চেনার কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো:
  • 1. ব্র্যান্ডের সুনামসুপরিচিত এবং বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের এসি সাধারণত ভালো মানের হয়। General, Mitsubishi, LG, Samsung, Daikin, Gree, এবং Walton এর মতো ব্র্যান্ডগুলো বাজারে পরিচিত এবং তাদের এসিগুলো ভালো মানের হয়।
  • 2. ইনভার্টার প্রযুক্তি (Inverter Technology)ইনভার্টার এসি শক্তি সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। ইনভার্টার কমপ্রেসার বিভিন্ন লোডে কাজ করতে সক্ষম হওয়ায় এটি শক্তি সাশ্রয় করে এবং দীর্ঘমেয়াদে খরচ কম হয়।
  • 3. বিটি ইউ রেটিং (BTU Rating)BTU (British Thermal Unit) এসির ক্ষমতা নির্ধারণ করে। আপনার ঘরের আকার অনুযায়ী সঠিক BTU রেটিং নির্বাচন করতে হবে। ঘর ছোট হলে কম BTU এবং ঘর বড় হলে বেশি BTU প্রয়োজন।
  • 4. এনার্জি এফিশিয়েন্সি রেটিং (EER)EER (Energy Efficiency Ratio) দ্বারা এসির শক্তি সাশ্রয়ের ক্ষমতা পরিমাপ করা হয়। EER যত বেশি হবে, এসি ততই শক্তি সাশ্রয়ী হবে। এনার্জি এফিশিয়েন্সি স্টার রেটিং দেখে ভালো এসি নির্বাচন করা যায়।
  • 5. নয়েজ লেভেল (Noise Level)এসির শব্দ স্তরও বিবেচনা করতে হবে। ইনভার্টার এসিগুলো সাধারণত কম শব্দ করে, যা বসবাসের পরিবেশে আরামদায়ক।
  • 6. এয়ার ফিল্ট্রেশন সিস্টেমএসিতে ভালো এয়ার ফিল্ট্রেশন সিস্টেম থাকা উচিত, যা ধুলা, ব্যাকটেরিয়া, এবং দূষণ প্রতিরোধ করতে পারে। ন্যানো জি বা প্লাজমা ফিল্টার থাকা ভালো মানের ইন্ডিকেটর।
  • 7. কুলিং স্পিড ও কভারেজ (Cooling Speed & Coverage)এসির কুলিং স্পিড এবং কভারেজ এর উপর নির্ভর করে এটি কত দ্রুত এবং কতটুকু এলাকা শীতল করতে পারবে। দ্রুত শীতল করার ক্ষমতা থাকা একটি ভালো এসির বৈশিষ্ট্য।
  • 8. স্থায়িত্ব ও মেরামতের খরচ (Durability & Maintenance Cost)এসির স্থায়িত্ব এবং মেরামতের খরচও বিবেচনা করতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী এবং সহজে মেরামতযোগ্য এসি ভালো বলে বিবেচিত হয়।
  • 9. স্মার্ট ফিচারস (Smart Features)কিছু এসিতে স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেম থাকে, যা মোবাইল অ্যাপ বা ভয়েস কন্ট্রোল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটি একটি ভালো ফিচার হতে পারে, তবে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এ ধরনের ফিচারগুলো মূল্যায়ন করা উচিত।
  • 10. পরিষেবা কেন্দ্রের উপস্থিতি (Service Center Availability)ভালো এসি কেনার আগে নিশ্চিত করুন যে ব্র্যান্ডের পরিষেবা কেন্দ্র আপনার এলাকার কাছে আছে কিনা। এটি ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা হলে দ্রুত সমাধানের জন্য সহায়ক হবে।এসব বিষয়ে খেয়াল রেখে এসি কেনার মাধ্যমে আপনি আপনার জন্য সেরা এবং মানসম্পন্ন এসি নির্বাচন করতে পারবেন।

জেনে নিন আপনার রুমের জন্য কত টনের এসি প্রয়োজন

আমরা ইতিপূর্বে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদ দুটির মাধ্যমে সেরা এসি এবং ভালো এসি নির্বাচন কিভাবে করবো তা জেনেছি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানবো। আর সেটি হচ্ছে আমার রুমের জন্য ঠিক কোন এসি বা কত টনের প্রয়োজন পড়বে। আমাদের সকলের রুম অবশ্যই একই পরিমানে নির্মান না। তাই প্রতিটি রুমের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা মেজারমেন্ট অনুযায়ী এসির শ্রেণির বিন্যাস। 

বা কতটন হলে আপনার একটি রুমের জন্য হবে বা কতটা বড় ছোট রুমের ভিত্তিতে আমরা কোন ধরনের এসি নির্বাচন করবো তা আমরা জানবো। তাই চলুন আমরা সেসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সমূহ জেনে নিই।আপনার রুমের জন্য কত টনের এসি প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে কিছু বিষয় বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। নিচে উল্লেখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার রুমের জন্য কত টনের এসি প্রয়োজন:
  • 1. রুমের আকার মাপুনফর্মুলা: লম্বা × প্রস্থ = স্কয়ার ফুট (sq ft)
  • উদাহরণ: যদি আপনার রুমের লম্বা ১৫ ফুট এবং প্রস্থ ১২ ফুট হয়, তাহলে রুমের আকার হবে:15 × 12 = 180 sq ft
  • 2. সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী টন বাছাই করুনছোট রুমের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত টন অনুযায়ী এসি বেছে নিন:120 - 150 sq ft: 1 টন
  • 150 - 180 sq ft: 1.2 টন
  • 180 - 250 sq ft: 1.5 টন
  • 250 - 300 sq ft: 2 টন
  • 3. অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়সিলিং উচ্চতা: যদি রুমের সিলিং উচ্চতা ১০ ফুটের বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত কুলিং ক্যাপাসিটি প্রয়োজন হতে পারে।
  • রুমের অবস্থান: দক্ষিণমুখী রুমে রোদ বেশি পড়ে, ফলে কুলিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।
  • উইন্ডো ও জানালার সংখ্যা: বেশি জানালা থাকলে সেগুলো দিয়ে তাপ প্রবেশ করতে পারে, ফলে বেশি টনের এসি প্রয়োজন হতে পারে।
  • ইলেকট্রনিক ডিভাইস: যদি রুমে অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস থাকে, তাহলে এগুলোর জন্য অতিরিক্ত কুলিং ক্ষমতা প্রয়োজন হবে।
  • 4. বিবেচনা করে নেওয়া সিদ্ধান্তআপনার রুমের আকার এবং উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে আপনি যে টন এসি বাছাই করবেন তা হবে আপনার রুমের জন্য উপযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার রুমের আকার হয় 180 sq ft এবং সেখানে অনেক জানালা ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস থাকে, তবে 1.5 টনের এসি উপযুক্ত হবে।
এই নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার রুমের জন্য প্রয়োজনীয় এসির টন নির্ধারণ করতে পারবেন।

লেখকের শেষ মন্তব্যঃ

আমরা ইতিপূর্বে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদ গুলোর মাধ্যমে একটি সঠিক এসি নির্বাচন করার খুব সহজেই বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি করতে পারবো। কিন্তু আপনি আপনার স্বাধ্য মতো আপনার সেরাটি নির্বাচন করুন আমরা শুধু কিছু অজানা তথ্য সিয়ার করেছে। আপনি আপনার রুমের পরিধি অনুযায়ী কত টন এসি লাগবে সেটি নির্বাচন করুন। পরিশেষে নতুন নতুন অজানা তথ্য জানতে এই সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url