বক্তব্য শেখার কৌশল - হিন্দু ধর্মীয় বক্তব্য এর নিয়ম জেনে নিন

প্রিয় পাঠক সকল আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করবো আলোচ্য বিষয় হচ্ছে সামাজিক, রাজনেতিক এবং ধর্মীয় স্থানে বক্তব্য শেখার কৌশল, নিয়মাবলি , কেনো বক্তব্য শেখবো এবং কোনো কোন কাজে আসবে সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা জানবো। আপনিও আলোচনার স্বাক্ষী হতে শুরু হতে শেষ পর্যন্ত বক্তব্য শেখার কৌশল সাথেই থাকুন।
বক্তব্য শেখার কৌশল
আমরা মানুষ হিসেবে একধারে সামাজিক এবং রাজনৈতিক জীব তাই একাধারে একজন ভালো মেন্টর, ভালো শিক্ষক, একজন ভালো সংগঠক, উদ্যোগতা প্রভৃতি গুণাবলির সন্দুরভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা জানা একান্তই আবশ্যক একটি বিষয় তাই আজ আমরা জানবো বক্তব্য শেখার কৌশল এবং হিন্দু ধর্মীয় বক্তব্য এর নিয়ম কানুন সহ আরোও বক্তব্য সম্পর্কিত অজানা তথ্য নিয়ে আলোচনা জানবো। সুতরাং আপনিও যদি বক্তব্য শেখার কৌশল সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে আর্টিকেলের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

পোস্টের সূচিপত্রঃ বক্তব্য শেখার কৌশল - হিন্দু ধর্মীয় বক্তব্য এর নিয়ম

শিরোনাম

বর্তমান সময়ে একধারে সামাজিক, রাজনৈতিক, এবং ধর্মীয় সকল কাজে আমরা সকলে একত্রিত হয়ে হয়ে থাকি। যখন কোনো ভালো একটি কাজ বা জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্য জনগণকে সেকাজ সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে বা সেব্যাপারে উৎসাহিত করতে একজন ভালো সংগঠক দরকার পরে আর একজন ভালো সংগঠক হতে গেলে আয়ন্ত করতে ভালো ভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করার ক্ষমতা।
তাই যদি আমরা এই আর্টিকেলের একজন ভালো বক্তা হতে গেলে কোনে কোন বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা জানবো। তাহলে চলুন আমরা দেরি না করে মূল আলোচনা গুলো জেনে নিই।

হিন্দু ধর্মীয় বক্তব্য এর নিয়ম

আমরা যখন সনাতন ধর্ম অবলম্বী তখন আমাদের হিন্দু ধর্মীয় বক্তব্য এর নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা একটি জরুরি বিষয় কারণ আমরা যেকোনো ধর্মীয় সভায় হিন্দু হওয়ার তরুন শুদ্ধভাবে গীতা এবং জনসম্মুখে ধর্মীয় বক্তব্য প্রদান করবার মতো দক্ষতা খুবই উপকৃত একটি অভিজ্ঞতা। সকলের কথা মানুষে বোধগম্য হয় না কিন্তু কিছু মানুষের সেই একই কথা খুব ভালো লাগে বা উক্ত বিষয় গুলো ভালোভালো উপস্থাপন করতে পারে। 
তাই আজ আমরা বক্তব্যে সাবলীল ভাষায় জানবো আশা করি এটি সকলেই বোধগম্য হবে। বক্তৃতা দেখার জনসম্মুখে সকলেই অভিজ্ঞতা থাকে না ভিতরে ভয় কাজ আবার কথা বলতে গেলে কথায় অনেক জড়তা থাকে তাই শুনতে কেমন জানি লাগে। তাই আজ আমরা এসব বাদ দিয়ে সঠিকভাবে উক্ত বিষয় উপস্থাপন করতে গেলে কোন কোন দক্ষতা আপনার অর্জন করতে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা জানবো। নিম্নে ধর্মীয় বক্তব্যের নমুনা দেওয়া হলোঃ
ওঁ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়ঃ
ওঁ
গুরু ব্রহ্মা গুরুর বিষ্ণু গুরুরদেব মহেশ্বর
গুরুরেব পরমব্রহ্ম তৈস্ময় শ্রীগুরুবেই নমঃনমঃ
ধন্যবাদ আমায় এমন একটি বিশাল জনসম্মুখে কিছু বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য, এখানে উপস্থিত মাননীয় সভাপতি, আরোও উপস্থিত আছে সম্মানিত ব্যাক্তিবর্গ এবং আমার সামনে উপবিষ্ট সকলকে জানাই নমস্কার,এবং আন্তরিক প্রীতি ভালোবাসা।
বিষয়ঃ হিন্দু ধর্মের গীতা হতে আলোচনা করবো।
আমি পাঠকরছি চতুর্থ অধ্যায় হতে ৩৯ নং শ্লোক বাংলা অনুবাদ সহ।
ওঁ শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা
অথ চতুর্থোধ্যায়ঃ জ্ঞানযোগঃ
শ্রী ভগবান উবাচ্
শ্রদ্ধাবান লভতে জ্ঞানং তৎপরঃ সংযতেন্দ্রিয়ঃ।
জ্ঞানং পরাং শান্তিম্ অচিরেণাধি গচ্ছিত।। ৪/ ৩৯
অনুবাদঃ পবিত্র গীতায় ভগবান বলেছেন যে যিনি শ্রদ্ধাবান, নিষ্ঠাবান এবং ইন্দ্রিয়গণকে জয় করছেন তিনি জ্ঞান লাভ করেছেন। আর তিনি অচিরেই পরম শান্তি লাভ করবেন।
গীতা মাহাত্ম্যাম
শ্রীভগবান উবাচ্
গীতাশ্রয়েহং তিষ্ঠামি গীতা মে পরম গৃহম্।
গীতাজ্ঞানং সমাশ্রিত্য ত্রিলোকীং পলায়ামাহ্যম্।।
অনুবাদঃ পবিত্র গীতায় ভগবান বলেছেন আমি গীতার আশ্রয়ে অবস্থান করি, গীতা আমার পরম গৃহ, এবং গীতার জ্ঞানকে অবলম্বন করিয়া আমি ত্রিলোক পালন করে থাকি।
নমষ্কার।
নিয়ামাবলিঃ
  • সাধুভাষা এবং চলিতভাষার মিশ্রন ঘটানো যাবে না।
  • ভাষায় উপমার ভুল সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
  • ভাষায় কোনো প্রকার জড়তা থাকা যাবে না।
  • সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে অত্যান্ত দক্ষতা সহিত বনীতভাবে কথা বলতে হবে।
  • আপনার মূল বিষয় বস্তু গুছিয়ে কথা বলতে হবে।
  • কঠিন নয় সাবলীল ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
  • একটি কথা বলার মাঝে একটু স্পেস নিয়ে আস্তে ধীরে বলতে হবে মনে রাখতে হবে যে আপনি যা কিছু বলতেছেন সেটা যেনো দর্শকে কাছে শ্রুতিমধুর শুনাই।
  • কোথায় বক্তব্য প্রদানের পূর্বে নিজে কয়েকবার সেই বক্তব্য রেকর্ড করে শুনুন আপনার কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে।
  • এরপরে সবকিছু ঠিকঠাক করে কথা গুলো গুছিয়ে নিয়ে দক্ষতা সহিন বক্তব্য দিন।
  • আপনি যদি প্রথম বক্তব্য প্রদান কারী হয়ে থাকেন তাহলে দর্শকে কাছে ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে পারেন এত আপনার বিনয় বাড়বে এবং শ্রোতার কাছে আপনার বক্তব্য বোধগম্য হবে অল্পতেই আপনাকে গ্রহন করবে।

বক্তব্য শেখার কৌশল - বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম

আমরা সকল ধরনের কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে। করন আমরা যখন একজন সংগঠক হিসেবে কাজ করবে তখন আমার মাধ্যমে বড় একটা অংশের মানুষদেরকে আমরা কথা দ্বারা উদ্বুদ্ধ, উৎসাহিত, বা একত্রিত করতে হবে সেইক্ষনে আপনার কথা গুলো সঠিক ভাবে উপস্থাপন যেনো আপনার কথা লোকজন বোঝে। যাই এইছাড়াও বক্তব্য শেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যেমন সমাজিক অনুষ্ঠানে, স্কুল কলেজর বার্ষিক অনুষ্ঠানে প্রভৃতি জায়গায় কথা বলার মতো আপনার দক্ষতা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। 
তাই আজ আমরা যেনো সকল স্থানে কথা বলার মতো বক্তব্য শেখার কৌশল দক্ষতা অর্জন করতে পারি এমন কিছু গোপন টিপস জানবো। যদি আপনার ও মনে হয় এমন তথ্যাবলি আপনার জানার প্রয়োজন রয়েছে তাহলে প্রতি পয়েন্ট মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং হয়ে উঠুন একজন ভালো মানের বক্তৃা। চলুন দেরি না করে আমরা পয়েন্ট গুলো জেনে নিই। নিম্নবর্গের বক্তব্য শেখার কৌশল পয়েন্ট গুলো ক্রমান্বয়ে সন্দুর ভাবে তুলে ধরা হলোঃ
  • কুশল বিনিময়ঃ নমস্কার / আদাব।
  • দর্শকের মনোযোগ আর্কষণ করা।
  • আবেগঘন বক্তব্যে সূচনা করা।
  • দর্শকে বয়স এবং আক্ষাখা অনুযায়ী বক্তব্য প্রদান করা।
  • সহজতর সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা।
  • বক্তব্যের মাঝে আবারও মূল পয়েন্টে ফোকাস করা।
  • বক্তব্যে চলাকালীন সময়ে কিছু বক্তব্যের মূল পয়েন্ট অনুযায়ী উদাহরণ দেখানো বা প্রয়োগ করা।
  • বক্তব্যের মাঝে দর্শকের মনোযোগ আর্কষন করে দর্শকে বক্তব্য যুক্ত করা "হ্যা" 'না" বলানো।
  • উপস্থিতি সকল দর্শকের নিকটা আপনার কথা গুলো পৌঁছে যায় এমন স্বরে বক্তব্য প্রদান করা।
  • মূল বক্তব্য বলতে তার বাহিরে অনাকাঙ্ক্ষিত বা অযথা প্রসঙ্গে না কথা বলা।
  • কথা বলতে হবে স্পষ্ট ভাষায় কোনো প্রকার জড়তা নিয়ে কথা বলা যাবে না মূল কথা আপনি যা বলছেন তা যেনো শ্রোতাদের নিকট সহজতর হয়।
  • কথা প্রসঙ্গে কিছু কথা ইংরিজিতে বলুন তাহলে শোতাদের মনযোগ আর্কষণ হবে।
  • আপনি কি বলতেছেন তা যেনো দর্শকের নিকট একটি ম্যাসেজ স্বরূপ হয়।
  • বক্তব্য শেষে বক্তব্যে একটি নৈতিক মরাল রাখুন।
  • বক্তব্যের সময় সোজ হয়ে দাঁড়িয়ে শান্তভাবে কথা বলুন এবং কুশল বিনিময়ের মাধ্যমেই বক্তব্যের ইতি টানুন।
বিঃদ্রঃ উপরিউক্ত বক্তব্য প্রদান করার নিয়মাবলি গুলো সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় তিন স্থানেই প্রদান করা যাবে শুধু বিষয় বস্তু পরিবর্তন করে উপরিউক্ত পয়েন্ট গুলো মাথায় রাখলেই হবে।

লেখকের শেষ কথা।

আপনি যেখানেই (রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয়) বক্তব্য প্রদান করুন না কেনো আপনার বক্তব্য কি নিয়ে তা জেনে মূল পয়েন্টে জোর দেওয়া সাথে সকলের নিকট একটি পজেটিভ ম্যাসেজ পৌঁছে দেওয়া। মূল আলোচনা ভালোভাবে বুঝানোর অর্থে সংগতিপূর্ণ একটি উদাহরণের সাহায্য নেওয়া। ভাষার মিশ্রণ না ঘটিয়ে চলিত ভাষায় বক্তব্য প্রদান করা এবং কঠিক করে না সহজসাধ্য হয় এমন ভাবে উপস্থাপন করা। উপস্থাপন করার পূর্বে আপনার পোশাকের মাঝেও একটি শালীনতা থাকতে এরপরে স্মার্টভাবে কথা বলুন। 

এবং মূল পয়েন্ট অনুয়ায়ী পরিমিত কথা বলুন খেয়াল রাখতে হবে যেনো আপনার কথায় শ্রোতা বিরক্তি বোধ না করে। পরিশেষে একটি নৈতিক মোরাল রেখে আপনার বক্তব্য শেষ করুন। আশা করবো বক্তব্য প্রদান করতে পারি এমন সব ধরনের আজানা তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পেরেছি পরিশেষে আর্টিকেলটি পরে আপনার অনুভূতি কেমন ছিলো তা কমেন্ট সেকশানে জানিয়ে রাখুন এবং নিয়মিত অজানা তথ্য জানতে এই সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url