রামনবমী কবে 2024 জানুন বাংলা এবং ইংরেজী সময়

প্রিয় পাঠক সকল আজ আমরা আবারও একটি ধর্মীয় তথ্যের আপডেট জানবো এতক্ষণে হয়তো আর্টিকেলের শিরোনাম দেখে বুঝেই গেছেন যে আজ আমরা ভগবান শ্রী রামের জন্মউৎসব তিথি মহা রামনবমী কবে 2024 সালের আপডেট তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। কেনো আমরা রামনবমী পলন করবো কিভাবে পালন করবো সময় যোগ কখন থেকে শুরু হচ্ছে রামনবমী কবে 2024 প্রভৃতি নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা জানবো।
রামনবমী কবে 2024
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নমবতম অবতার রাম অবতার। ভগবান রামচন্দ্র যখন মর্তলোকে অবতরণ করেন সেই শুক্লপক্ষের তিথিকে রামনবমী বা রাম জন্ম উৎসব পালন হয়। আজ আমরা রামনবমী কেনো পালন করা এবং রামনবমী কবে 2024 সালে কত তারিখে বাংলায় এবং ইংরেজি তারিখ সহ জানবো। তাই চলুন আমরা কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা রামনবমী কবে 2024 ফোকাস করি সাথেই থাকুক।

পোস্টের সূচিপত্রঃ রামনবমী কবে 2024

সূচনা

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ত্রেতা যুগের নবম অবতার ভগবান শ্রীরাম চন্দ্র। তিনি অযোধ্যা নাম রাজ্যে রাজা দশরথের প্রথম স্ত্রী কৌশল্যার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। আমরা সকলে জানি যে পৃথিবী যখন যখন অশুভ শক্তির প্রভাব বেড়ে যায় তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কোন অবতার ধারণ করে পৃথিবীতে অবতরণ করে লক্ষ্য হচ্ছে দুষ্ট লোকদের দমন এবং সাধুজনদের রক্ষা করা মোটকথা পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষার্থে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বারবার অবতার রূপে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন। 

মূলত ভগবান রামচন্দ্রের জন্ম উৎসবকে কেন্দ্র করে রামনবমী উৎসবটি চালু হয়েছিল যা বর্তমানেও জনপ্রিয়তার সাথে উৎসবটি পালিত হয়ে থাকে। বাংলা মাসের চৈত্র মাসে নবম দিনকে কেন্দ্র করে রামনমবী পালিত হয়ে থাকে। আবার এই দিনে আমাদের মাথা পার্বতীর ও আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাই এই বিশেষ দিনকে মাতৃদিবস ও বলা হয়ে থাকে হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র অনুযায়ী। রামনবমী অনুষ্ঠান শুরু হয়ে থাকে পঞ্চমীর থেকে এবং শেষ হয়ে থাকে দশমী পর্যন্ত। 
রামনবমী মন্দিরে মন্দিরে ভক্তের সমাগম বেড়ে যায় অনেক দূর দূরান্তে থেকে ভক্তেরা এসে মন্দিরে ভজনগীত সাধনা, ধর্মসভা, বক্তৃতা রামনাম কীর্তিন, সহ নানা ধরনের উৎসব পালিত হয়। এই দিনে ভগবান রামচন্দ্রের অমৃত কাহিনি আমাদের মনে অনুপ্রেরণা প্রদান করে থাকে। ভক্ত সকল রামে জন্ম উৎসব পালন করতে দোলনাতে করে ভগবানকে সেখানে অবতরণ করে দোল প্রদান করে এবং সেই দিন রাস্তায় রাস্তায় রাম শোভাযাত্রা করে এক বিশাল র‍্যালি বের হয় সেখানে অনেক ভক্ত থাকে তাঁরা রামকথা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়। মন্দিরে মন্দিরে ভক্তরা পূর্ণ তীর্থস্থানে সুফল লাভ করে থাকে।

রামনবমী কবে 2024

হিন্দু ধর্মের সেই ত্রেতা যুগ থেকে ভগবান রাম চন্দ্রের জন্ম উৎসবকে কেন্দ্র করে আজ পর্যন্ত রাম জন্ম উৎসব বা রামনবমী পালিত হচ্ছে। এটি একটি পূর্ণ যোগ বাংলা প্রতি বছরের শুক্লপক্ষের তিথিকে মেনে প্রথম নমব দিনটিকে রামনবমী কবে 2024 মহাউৎসব পালিত হয়। প্রতিবছরের মতো এই বারেও রামনমবী মহাউৎসব পালিত হবে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে প্রথম নমমতম দিন। 

চৈত্র মাসের ৯ তারিখ রোজ বুধবার। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ রোজ বুধবার দিনটি রামনবমী কবে 2024 মহানবমী উৎসব পালিত হবে। শাস্ত্র অনুযায়ী মহানবমীর উৎসবের যোগ শুরু হবে বাংলা ক্যালেন্ডার মতে ৮ তারিখ ১ টা ২২ মিনিট থেকে নবমীর যোগ শেষ হবে পরের দিন ৯ তারিখ রোজ বুধবার বিকেল ৩ টা ১৫ মিনিটে। 

চৈত্র মাসের পঞ্চম দিন থেকে পঞ্চমী উৎসব শুরু হয়ে যায় এবং দশমী পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলতে থাকে। রামনবমী আমাদের রামায়ণ কাহিনিকে নির্দেশ করে পুনরায় মনে ধর্ম স্থাপিত হয়। সেখানে ধর্মআলোচনা, বক্তৃতা, গীতাপাঠ, নামসংকৃীর্তন হয়।
পরিশেষে এক বিশাল মিলনমেলায় পরিনত হয়। উৎসবে ভক্তরা অংশগ্রহন করে নানা ধরনের পূজার উপকরণ ( ফুল, ফুলের মালা,ঘন্টা, শংঙ্খ প্রভৃতি) নিয়ে রাম মন্দিরে উপস্থিত হয়। ভগবান রামচন্দ্র এই সময়ে ভক্তের সকল মনষকামনা পূরণ করে থাকেন এজন্য ভগবান রামচন্দ্রের আরেক নাম কৃপানিধাও বলা হয়। ভগবান রাম মন্দিরে ভগবান রাম সীতা, লক্ষ্মণ এবং উত্তম ভক্ত হনুমান বিরাজ করেন।

রামনবমী পালনের নিয়ম

মহারাবমী পালনের সময় জানা আমাদের একান্তই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ আমরা যে কোনো কাজই করি না কেন সেই কাজটি করার পূর্বে সেবিষয়ে আমাদের জ্ঞান থাকা জরুরি তাছাড়া সেই কাজটি সঠিক বা পূর্ণফল লাভ করতে ব্যর্থ হবো তাই আপনি আমি জেনে নিই যে এই নতুন বছরের মহারামনবমী পালন করতে কি কি আমাদের করা অবশ্য। তাহলে আমরা সঠিক নিয়ম মেনে উৎসবটি পালিত করতে পারবো। তাই চলুন আমরা জেনে নিই রামনবমীর পালনের নিয়মাবলি নিম্নবর্গের তা সুন্দরভাবে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলোঃ
  • উক্ত দিনে প্রভাতে বিছানা ত্যাগ করে ব্রহ্মযোগে (৫ :০০) স্নান করুন।
  • তারপরে পরিশুদ্ধ বস্তু পরিধান করে মন্দিরে গিয়ে ভগবান রামকে দর্শন, প্রণাম, পূজা করুন এবং প্রার্থনা শেষে ব্রত শুরু করুন।
  • সারাদিন উপবাস করুন যদি আপনি সমর্থ হোন তাছাড়া ছোটদের জন্য পঞ্চ শস্য ব্যতীত ফলমূল অল্প পরিসরে আহার করতে পারবে।
  • নিজেকে সংযমী করে তুলুন ( সংযমী রাগ না করা, স্বার্থ হেতু হিংসা না করা, সত্য কথা বলা, অহেতুক বেশি না কথা বলা, চোখ, কান, নাসিকা সহ সকল প্রকার অঙ্গ প্রতঙ্গ সংযত রাখতে হবে)।
  • এরপরে সারাদিনে ধর্মীয় কাজ কর্মে আত্ম নিয়োগ করুন।
  • ধর্মীয় আলোচনা শুনুন। সকলের সাথে ভালো আচার করুন।
  • অধিক পূর্ণ লাভ করতে মন্দিরে সাদা ফুল এবং ফুলের মালা অর্পণ করুন। পরিশেষে পরের দিন যথারীতি সময়ে উপবাস ভঙ্গ করুন।

রামের প্রনাম মন্ত্র

রাম নবমী মহাউৎসবে প্রভু শ্রী রামের প্রণাম মন্ত্র একান্তই আবশ্যক। আজ আমরা সকলে জেনো পাঠ করতে পারি বাংলায় প্রভু শ্রীরামের প্রনাম মন্ত্রটি জানবো। আশা করবো ছোট বড় সকলেই মনে রাখতে পারবেন তাই চলুন আমরা প্রনাম মন্ত্রটি জেনে নিই
ওঁ রামায় রামচন্দ্রায় রামভদ্রায় বেধসে
রঘুনাথায় নাথায় সীতায়াং পতনে নমঃ।।
প্রভু শ্রীরামের জপ মন্ত্র জপলে দেহ মন পবিত্র হয় সাথে জীবনের সকল দুঃখ দুর্দশা নিমিশে দূর হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে পবিত্র মনে একচিত্তে একমনে প্রভু রামের জপ করুন।

রামের ধ্যান মন্ত্র

আমরা সকলেই তো প্রভু শ্রীরামের সেবন বা ভক্ত তাই প্রতিদিন ভক্তিভরে প্রভু রামের উপাসন করতে হলে আমাদের একটি আসনের প্রয়োজন পরে সেটা পদ্নাসন বা যে কোনো আসন। একটি আসন করে মনকে শান্ত করে যোগঃভ্যাস বা ধ্যান করতে হয় এতে করে দেহের তেজ বৃদ্ধি পায় সকল ধরনের বাধাবিপত্তির সামনে মনোবল সঠিক রাখতে বিশেষ সহায়তা করে।
তাই যদি আমরা প্রভু রামের ধ্যান মন্ত্রটি নিয়মিত জপ করতে পারি তাহলে সমস্যা কোথায়। যেসকল সনাতনীরা রামের ধ্যানের মন্ত্রটির খোঁজ করছেন তাঁরা আজ এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে জেনে নিন এবং প্রতিদিনে পাঠ করে হয়ে উঠুন একজন পরম শুদ্ধ ভক্তে। নিম্নবর্গের প্রভু শ্রীরামের ধ্যান মন্ত্রটি তুলে ধরা হলোঃ
ওঁ আপদা মমপ হর্তারম দাতারং সর্ব সম্প্রদাম্
লোকাভিরামং শ্রী রামং ভূয়োভূয় নামাম্যহম্
শ্রী রামায় রামভদ্রায় রামচন্দ্রায় বেধসে রঘুনাথায় সীতা পতয়ে নমো নমঃ।।
  • "জয় শ্রী রাম"।
  • ওঁ শ্রীরাম চন্দ্রায় নমঃ।
  • ওঁ রাম ভদ্রায় নমঃ।
  • ওঁ রঘুনাথায় নমঃ।
  • ওঁ দান্তায় নমঃ।

সীতা প্রণাম মন্ত্র

পৌরাণিক শ্রাস্ত্র অনুযায়ী প্রভু শ্রীরামের সহধর্মিণী ছিলেন রাজা জনকের বড় কন্যা সীতা। তিনি ছিলেন রামের শুদ্ধ ভক্ত সাথে সহধর্মিণী তাই যদি আমরা মাতা সীতাকে প্রনাম দ্বারা প্রসন্ন করতে পারি তাহলে প্রভু রামও অধিক প্রসন্ন হবেন। তাই আজ আমরা বাংলায় মাতা সীতার প্রনামও জানবো আশা করি আপনাদের সকলেই তা বোধগম্য হবে। চলুন শুরু করা যাক।
বন্দে রামহৃদম্ভোজ প্রকাশাং জনকাত্না জানম্
সত্রিবর্গ পরমানন্দ দায়িনীং ব্রক্ষরুপিণীমা।।

সীতার ধ্যান মন্ত্র

আমরা পূর্বেই জেনেছি জেনে মাতা সীতা ছিলেন প্রভু শ্রীরামের শুদ্ধতম ভক্ত তাই যদি আমরা মাতাকে প্রসন্ন করতে পারি তাহলে সহজেই প্রভু রামের কৃপা লাভ করতে পারবো। তাই মাতাকে প্রসন্ন করতে পথটি জেনো একটু সহজতর হয় এজন্য আজ আমরা জানবো মাতা সীতার ধ্যান মন্ত্র। আমরা সকলে জানি যে গভীর সাধনায় নিজেকে নির্মগ্ন করাকেই ধ্যান বলে। 

ধ্যান হচ্ছে জীবনে চলার পথে চিরস্থায়ীয় মানসিক প্রশান্তিতের থাকার চিরসত্য একমাত্র উপায়। যাইহোক যতটুকু আমরা জানবো তা ব্যাস্তবিক জীবনেও তার প্রয়োগ ঘটাবো। চলুন আমরা মাতা সীতার ধ্যান মন্ত্রটি জেনে নিই। নিম্নবর্গের বাংলায় মাতা সীতার ধ্যান মন্ত্রটি তুলে ধরা হলোঃ
নীলাম্ভোজদলা ভিরামনয়নাং নীলাম্বরালঙ্ কৃতাং গৌরাঙ্গীং শরদিন্দুনন্দর মুখীং বিষ্মের বিশ্বাধারাম্।।
কারণ্যামৃতবর্ষিণীং হরিহরব্রহ্মদিভি ব্বর্ন্দিতাং ধ্যায়েৎ সর্ব্বজনেপ্ সিতার্থ ফলদাং রামপ্রিয়াং জানকীম্।।

শেষ মন্তব্য

রামনবমীতে মন ভরে রামনাম জপ করুন। সকলের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ গড়ে তুলুন রামায়ণ পাঠ করুন। ধর্মীয় কাজে একবার আত্মনিয়োগ করুন দেখবেন দেহ মন অনেকটা শান্ত হয়ে গেছে সকল ধরনের অবসাদ দূর হয়ে গেছে জীবন হয়েছে ধর্মময়। তাই ধর্মীয় সকল কাজে অবশ্যই আত্মনিয়োগ করুন ধর্মীয় সকল বিধি নিষেধ মেনে চলুন। পরিশেষে ধর্মীয় আর্টিকেলটি নিজে পড়ুন এবং আপনজনদের নিকট পড়ার সুযোগ তৈরি করে দিন আর নিয়মিত ধর্মীয় আপডেট তথ্যের সন্ধান পেতে এই সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url