পৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় - মকর সংক্রান্তি কোন দিনকে বলা হয়
প্রিয় পাঠক সকল আশা করি সকলে ভিতর থেকে সুস্থ আছেন আজ আমরা নিয়মিত ধর্মীয়
প্রতিবেদনে মতো আজ আরোও একটু নতুন প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জানবো তাই
আজকের প্রতিবেদনটি সুস্পষ্ট ভাবে জানতে আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ুন আজকের মূল
আলোচনা থাকছে পৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় এবং মকর সংক্রান্তি কোন দিনকে বলা
হয়। আজও আমরা পৌষে পার্বন উৎসবটি পালিত তো করে চলছি কিন্তু পৌষ সংক্রান্তি কেন
পালন করা হয় এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা এখনো অজানা তাই আজ সেই অজানা তথ্য সমূহ গুলো
জানবো।
ধর্মীয় বিষয়ে অজানা তথ্য সমূহ জানতে যদি আপনার ভালোলাগা কাজ করে তাহলে আজকের
আর্টিকেল আপনার জন্য হতে চলেছে আজ থাকছে পৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় সে বিষয়ে
গুরুত্বপূর্ণ আজানা তথ্য। আশা করি আপনি এসব তথ্য জেনে উপকৃতই হবেন তাই চলুন আমরা
সময় আর নষ্ট না করে মূল আলোচনা পৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় তা নিয়ে হিন্দু
ধর্ম মতে কিছু অজানা তথ্য গুলো জেনে নিই।
পোস্টের সূচিপত্রঃপৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় - মকর সংক্রান্তি কোন দিনকে বলা হয়
সূচনাঃপৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় - মকর সংক্রান্তি কোন দিনকে বলা হয়
পৌষে পর্বন বা মকর সংক্রান্তি পৌরাণিক কাল হতেই এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে এটি পালিত
হবার পিছনে একটি তাৎপর্যপূণ্য কাহিনী রয়েছে সেসব তথ্য একটু পরেই আমরা নিম্নোক্ত
টপিকের মাধ্যমে বিস্তারিত জানবো। এই উৎসবে প্রতিটি বাসায় নানা ধরনের পূজা পার্বন
উদযাপিত হয়ে থাকে সাথে থাকে নানা ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন। এজন্য পৌষে পার্বন
উৎসবটি এখন নানা জায়গায় পিঠাপুলির উৎসব নামেও পরিচিতি লাভ করেছে। এই সময়েই যত
পুরোনো পদ্ধতিতে পিঠার দেখা মিলে যা পুরনো ধর্মীয় কালচার বা ইতিহাস মনে করে দেয়।
পৌষ সংক্রান্ত দিনটি মূলত বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিনটিকে বলা হয়ে থাকে। এই সময়ে
নানা জায়গায় সুবিশাল এক মিলনমেলার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার দেখা মিলে নানা ধরনের
বিনোদনের জন্য আয়োজন দেখা যায় এবং সকলে নানা ধরনের পিঠাপুলি তৈরি পদ্ধতি প্রদর্শন
করে থাকে। যাই হোক এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা জানবো চলুন তা শুরু করা যাক।
পৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় - মকর সংক্রান্তি কোন দিনকে বলা হয়
প্রতিবেদনের শুরুতে একটি তথ্য জেনে রাখা ভালো যে পৌষ সংক্রান্তি এবং মকর
সংক্রান্তি মূলত একটিই দিনকে বলা হয়ে থাকে। এখন আমরা জানবো কেনো আমরা পৌষ
সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় বা করছি। অন্য ভাবে বলতে গেলে এই দিনের বিশেষত্ব কি
রয়েছে তা আমরা জানবো। শ্রাস্ত্রে বর্ণিত রয়েছে যে দেবতা গণদের বছরে বা ৩৬৫ দিনে
এক দিবা রাত্রি সংঘটিত হয়ে থাকে। এর মাঝে একটি তথ্য জানুন ধর্মীয় মতে দুটি আয়নের
কথা উল্লেখ পাওয়া যায় দক্ষিণায়ন এবং উত্তরায়ণ। ধর্মীয় ভাবে বর্ণিত যে দক্ষিণায়নে
স্বর্গদায় বন্ধ থাকে এবং উত্তরায়ণে আবার স্বর্গদায় খোলা থাকে।
এই বিষয়টি একটি মহাভারতের বর্ণিত মহামহিম ভীষ্মের জীবনি নিয়ে আলোচনা করা যাক।
আমরা সকলে কম বেশি মহাভারত সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে মহাভারতে এক সময় ধর্মযুদ্ধ আরম্ভ
হলে যুদ্ধেরত থাকা অবস্থায় পান্ডবের দ্বারা ভীষ্ম তীরে শৌযা হয়ে পরেন কিন্তু
মহামহিম ভীষ্ম ছিলেন ইচ্ছে মৃত্যুে বরপ্রাপ্ত। তিনি তীরের মৃত্যুসমান যন্ত্রণা
পেয়েও মৃত্যুকে বরণ করেননি এর পিছনে একটি কাহিনি রয়েছে তা হলো যখন মহামহিম তীরে
শৌযায় ছিলেন তখন ছিলো দক্ষিণায়ণ সে সময় স্বর্গদ্বার বন্ধ ছিলো। তিনি আটান্ন (৫৮)
দিন বাদে যখন এই আসন্ন দিন উপস্থিত হয় মানে পৌষে সংক্রান্তি দিনটি উপস্থিত হয়
মানে উত্তরায়ণ শুরু হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এখন আমরা অবশ্যই জেনেছি যে কেনো এই দিনটি এত বিশেষ কারণ এই দিনে স্বর্গদ্বার খোলা
থাকে। পরিশেষে বলতে পারি যে এই দিনে দেবতাদের দিন শুরু হয় এবং স্বর্গদার খুলে
যায়। এবং দক্ষিণায়ণে স্বর্গদার বন্ধ থাকে এই সময়ে বলা হয়ে থাকে দেবগণদের
রাত্রিকাল। তাই উত্তরায়ণ দিনটি সকলের জন্যই শুভ বলে বিবেচিত তাই পৌরাণিক কাল হতেই
এই উত্তরায়ণের বা পৌষে সংক্রান্তি দিনটি আমরা পালিত করে আসতেছি।
কর্কট সংক্রান্তি কাকে বলে
আমরা সকলে এই বিষয়ে জানি যে সূর্যকে কেন্দ্র করে চারিপাশে গ্রহ নক্ষত্র গুলো
প্রদক্ষিণ করে বা পরিক্রমা করে। পৃথিবীর মাঝে দুটি রেখা বিত্তমান একটি হলো মকর
রেখ অপরটি কর্কট রেখা। পৃথিবী যখন নিজ কক্ষ হতে প্রদক্ষিণ করে আবার পুরনায় নিজ
কক্ষে আসতে ছয় মাস সময় লেগে যায়। যখন পৃথিবী উত্তরে অবস্থান করে তখন তাকে
উত্তরায়ণ বলে। সময় ডিসেম্বর মাসের ২২ তারিখ হতে জুন মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত সময়কে
উত্তরায়ণ বা কর্কট সংক্রান্তি বলা হয়ে থাকে।
অপর দিকে পৃথিবী যখন দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করে তখন তাকে দক্ষিণায়ণ বলে। সময়
জুন মাসের ২১ তারিখ হতে ডিসেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত সময়কে দক্ষিণায়ণ বলে বা
মকর সংক্রান্তি বলা হয়ে থাকে। এর মাঝে একটি তথ্য জেনে রাখা ভালো যে ২১ ডিসেম্বর
সবথকে ছোট দিন সংঘটিত হয় এবং ২২ জুন সবচেয়ে বড় দিন সংঘটিত হয়ে থাকে। পরিশেষে বলা
চলে যে পৃথিবীরর কক্ষ পথের অবস্থান যখন উত্তর গোলার্ধ বা ২২শে ডিসেম্বর হতে ২১শে
জুন সময়কে কর্কট সংক্রান্তি বলা হয়।
পৌষ সংক্রান্তি 2024
উপরিউক্ত অনুচ্ছেদের মাধ্যমে আমরা পৌষ সংক্রান্তি কেন পালন করা হয় তা নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা জেনেছি এখন আমরা এই নতুন অনুচ্ছেদের মাধ্যমে নতুন বছর ১৪৩১ বাংলা সন এবং ইংরেজি ২০২৪ ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে পৌষ সংক্রান্তি 2024 তারিখ,
দিন, জানবো। তাহলে মূল আলোচনা শুরু করা যাক পৌষ সংক্রান্তি পৌরাণিক কাল হতে একই
সময়ে পালিন হয়ে আসতেছে কিন্তু ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে একটু ভিন্নতা হয়ে থাকে
৪ বছর পর পর যে লিপিয়ার বছর সংঘটিত হয় এর কারণে ১ থেকে ২ দিন কম বেশি হয়ে
থাকে।
এই নতুন বছরে যেহেতু কোনো লিপিয়ার বছর পরছে না তাই আগের দিনটিই পৌষ সংক্রান্তি
উদযাপিত হবে বাংলা সন অনুযায়ী ১৪৩১ সন তারিখ ৩০ পৌষ দিন সোমবার। এবার ইংরেজি
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১ দিন আগে পিছে রয়েছে এর জন্য ১৪ জানুয়ারি পরছে কিন্তু পালিত
হবে ১৫ জানুয়ারি দিন সোমবার 2024। তাহলে আমরা ১৫ তারিখ জানুয়ারি রোজ সোমবারে
পালিত হচ্ছে পৌষ সংক্রান্তি 2024।
সংক্রান্তি অর্থ
উপরিউক্ত অনুচ্ছেদ গুলোর মাধ্যমে এই হয়তো আমরা জেনেই গেছি যে সংক্রান্তি অর্থ কি
তবু্ও বিষয়টি আর একটু পরিষ্কার করা যাক। সংক্রান্তি অর্থ হচ্ছে কোনো মাসের শেষ
দিনকে সংক্রান্ত বলা হয়ে থাকে। ধর্মীয় মতে সূর্য যখন একটি রাশি সঞ্চালন হতে অন্য
রাশিতে সঞ্চালন করে তখন তাকে সংক্রান্তি বলা হয়। সংক্রান্তির সমার্থক শব্দ হচ্ছে
সংকট, সংকলন, সংকলায়িতা প্রভৃতি।
সংক্রান্তি নিয়ে শেষ কথা
বাংলা মাসের শেষ দিনকে আমরা সংক্রান্তি বলি এবং মাসের শুরুর দিনকে পহেলা বলি।
যাইহোক পৌষে সংক্রান্তি দিনটি পৌরাণিক কাল হতেই একই সময়েই উদযাপিত হয়ে আসছে এই
নতুন বছরেও এর কোনো বিকল্প নয়। পরিশেষে ধর্মীয় প্রতিবেদনটি আপনার কাছে কেমন
লেগেছে এবং পরর্বতীতে কোন ধরনের ধর্মীয় আপডেট জানতে আগ্রহী তা আপনার মূল্যবান
মতামত কমেন্ট সেকশানের মাধ্যমে জানাবেন এবং তথ্য সমূহ ভালো লাগলে প্রিয়জনদের নিকট
পৌঁছে দেবার অনুরোধ রইল। আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url