মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে - কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ
প্রিয় পাঠক সকল নতুন ধর্মীয় তথ্য ভান্ডারে আপনাকে স্বাগতম! আজ আমরা
মহাভারতের যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কিছু অজানা তথ্য সমূহ জানবো যেমন মহাভারতের
শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে, কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা ছিলেন এ ব্যাতিতও
আরো অজানা তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে তাই সঠিক তথ্য জানতে আজকের
আর্টিকেল চোখ রাখুন এবং খুব সহজেই বাংলা ভাষায় মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে
তা জেনে নিন।
মহাভারতের অনেক অনেক মহারথী থাকা শর্তেও কর্ণ কেনো শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা হলেন তার সঠিক
ব্যাখা জানুন। দ্বাপর যুগে কৌরব এবং পান্ডবের মাঝে এক মহাযুদ্ধ সংঘটিত হয় সেখানে
অনেক মহারথীর বধ করে কে শ্রেষ্ঠ হয়েছিলেন এবং কে উত্তম যোদ্ধায় পরিণত হয়েছিল তাই
নিয়ে আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানবো ধর্মীয় আলোকে। সুতরাং কথা আর
না বাড়িয়ে চলুন আমরা মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে ছিলেন এবং কর্ণ এবং অর্জুনের
মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ হলেন তা জানবো তাই এমন তথ্য জানতে সাথেই থাকুন।
পোস্টের সূচিপত্রঃমহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে - কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ
মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে
প্রিয় পাঠক সকল আজ আমরা নিয়মিত ধর্মীয় তথ্য উপস্থাপন করার মতো আজও একটি ধর্মীয়
আজানা তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জানবো। আজকের অনুচ্ছেদের আলোচনা দ্বাপর
যুগের শ্রীকৃষ্ণের পূর্ণ অবতারে কারণ সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আজানা
তথ্য মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে গুলো জানবো। আমরা কম বেশি সকলেই মহাভারতের
কাহিনী সম্পর্কে কিছু জ্ঞান প্রত্যেক ব্যক্তিই রয়েছে তবুও আজ স্পর্শ একটি ধারণা
প্রদানের লক্ষ্যে আজকের আয়োজন। আমরা মহাভারতে দেখেছি যে সেখানে অনেকই মহারথী গণ
বা যোদ্ধা ছিলেন যথাক্রমে দেবব্রত বা মহামহীম ভীষ্য, গুরু দ্রণাচার্চ,মহাবীর
কর্ণ, রাজা ধ্রুপদ, দুর্যোধন, অর্জন, ভীম, যুধিষ্ঠির, নকুল, সহদেব,অভিমুন্য সহ
অনেকেই ছিলেন।
এখন আমরা জানবো এত এত মহারথী যোদ্ধাদের নিকট বা মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে
ছিলেন। আমরা হয়তো অনেকে জানি যে বিশেষ কারণ বসত মহাভারতের ১৮ দিন ব্যাপি মহাযুদ্ধ
বা ধর্মযুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধের কী কারণ ছিলো আজ আমরা সে বিষয়ে না লক্ষ্য দিই আজ
আমরা শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে হয়েছিল তা জানবো। ১৮ দিন যুদ্ধে অনেক মহারথীকে বধ করা
হয়েছিল। যুদ্ধ সমাপ্তিকালে শ্রেষ্ঠের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিল মহারথী মহাবীর কর্ণ।
ব্যাখা কে শ্রেষ্ঠ হয়েছিলেন মহারথী কর্ণ ছিলেন সূর্য পুত্র তা দৈবিক ভাবে মাতা
কুন্তীর লাভ করেছিলেন।
যখন মাতা কুন্তীয় ঋষি দূর্বাসার আর্শীবাদে মন্ত্র প্রসাদ হিসেবে কর্ণকে লাভ
করছিলেন তখন মাতা কুন্তীয় কুমারী অবস্থায় ছিলেন তখনও তিনি বৈবাহিক সম্পর্ক
স্থাপান করেননি এজন্য সমাজের কটাক্ষে হাত থেকে রক্ষার জন্য তিনি কর্ণকে জন্মকালেই
ত্যাগ করতে হয়েছিল এমতাবস্থায় ভগবান সূর্যনারায়ণ কর্ণকে রক্ষার্থে কবচ এবং
কুন্ডলী প্রদান করেন। কর্ণ ছিলেন অজেয়ও তাঁর কবচ কুন্ডলী ভেদ করে কেউ তাঁকে
পরাজিত করতে পারতো না।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দেবরাজ মহৎউদ্দেশের জন্য ছল করে কর্ণে থেকে কবচ এবং কুন্ডলী
নিয়ে নেই কারণ ছিলো এটি সম্পন্ন রুপে মানবদের যুদ্ধ ছিলো তাই বৈদিক শক্তি নিয়ে
নেওয়া হয়। যাইহোক কর্ণ ছিলেন মহান দাতা যা তিনি নিজের দেহের কবচ কুন্ডলী ত্যাগ
করার মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। তিনি প্রতিদিন দান করেন এমস্থায় মাতা কুন্তীর তাঁর
চারটি পুত্রের প্রাণ ভিক্ষা দিয়েছেন। অবশেষে যুদ্ধ রথ অবস্থায় কিছু মিথ্যে
আশ্রয়ের জন্য গুরুর দেওয়া অভিশাপ ফলশ্রুতি ঘটে এবং কর্ণ সমস্ত বিদ্যা পাঠ ভুলে
গিয়েছিলেন এবং মৃত্যু অবস্থাতে তাঁর নিকট কোনো অস্ত্র ছিলো না।
এখন এই বিষয়টি একটু বিশেষ খেয়াল করেন তাহলে মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে
একজন যুদ্ধার নিকট কোনো অস্ত্র নেই এবং আসন্ন সনয়ে তাঁর সমস্ত বিদ্যার লুপ্ত
হয়েছে এমতো সময়ের সুযোগে নিয়ে ছল করে তাঁকে বধ করতে হয়েছিল। এজন্যই মহাভারতের
শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা ছিলেন মহারথী, দানবীর, অঙ্গরাজ কর্ণ। তিনি যুগ যুগ ধরেই তাঁর
সূর্যের বা সামর্থ্যে কথা সকলে মনে রাখবে।
কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ
প্রিয় পাঠক আমরা ইতিপূর্বে মহাভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধা কে ছিলেন তা জেনেছি এখন
আমরা এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে জানবো কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ ছিলেন। চলুন
আমরা ধর্মীয় আলোকে তা জেনে নিই। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক কারণ আজও আমাদের
মাঝে কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে কোনো স্পর্শ ধারণা আমরা বলতে পারি
না। কোনো ব্যাপার না আজ আমরা এই সংয়শের অবসান ঘটাবো তাই এই অনুচ্ছেদেটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন তাহলেই স্পর্শ ধারনা আপনি লাভ করতে পারবেন।
যাইহোক এখন আমরা মূল টপিকের আলোচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জানবো। মূল আলোচনা
শুরু করার পূর্বে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বাণী সম্পর্কে কিছু তথ্য আমরা জেনে নিই তাহলে
আর্টিকেলটির বিষয় বস্তু বুঝতে অনেকটায় সহজতর হবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বাণী অনুযায়ী
মানব জাতিকে দুইটি গুণ দ্বারা নির্ধারন করছেন একটি হলো শ্রেষ্ঠ অপরটি হলো উত্তম।
যে ব্যাক্তি কেবল নিজের সামর্থ প্রদর্শনের জন্য অন্য ব্যাক্তির সাথে প্রতিযোগিতা
করে কোনোদিন সাফল্য অর্জন করলে তাকে শ্রেষ্ঠ বলা হয়। অপরদিকে উত্তম হবার জন্য
কোরো সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয় না প্রতিযোগিতা কেবল নিজের সাথে।
না আছে জয়ের আনন্দ এবং না আছে পরাজয়ের ভয় কেবল আত্মার তৃপ্তি জন্য কাজ করা। আর
একটি কথা যে শ্রেষ্ঠ হবার প্রয়াস করে সে শ্রেষ্ঠ হোক বা না হোক এ কোনো বড় ব্যাপার
না কারণ সেকখনোই উত্তম হতে পারে না। আর যে ব্যাক্তি উত্তম হবার প্রয়াস করে সেকখনো
না কখনো উত্তম হয়েই যায় এবং উত্তম হলে শ্রেষ্ঠত্ব এমনিতেই প্রকাশিত হয়ে
যায়।
এবার চলুন মহাভারতে কে শ্রেষ্ঠ এবং কে উত্তম ছিলেন তা জেনে নিই। মহাভারতে মহাবলী
কর্ণ ছিলেন শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা করণ তাঁর ছোট থেকেই সমাজের তাঁর প্রতি বিরুদ্ধাচার
করলে সে সর্বদায় শ্রেষ্ঠ হবার প্রয়াস করতো এবং পরিশেষে তাঁর মনে অর্জুনকে বধ করে
শ্রেষ্ঠ হবার প্রয়াস করতে সে এজন্য অবশেষে তিনি যুদ্ধ শেষে শ্রেষ্ঠ অবশ্যই
হয়েছিলেন কিন্তু উত্তম কখনোই হতে পারেনি।
অন্য দিকে অর্জুন ছিলেন মহারথী তিনি কোনো ব্যাক্তির সাথে প্রতিযোগিতা করেননি কেবল
ধর্ম স্থাপনের জন্য মহাযুদ্ধ করতে সহমত জানিয়ে ছিলেন। এজন্যই তিনি পরর্বতীতে
উত্তম যোদ্ধায় অবতীর্ণ হোন তাঁকে শ্রেষ্ঠ হবার জন্য কোনো প্রয়াসে করতে হয়নি। যে
যুদ্ধা উত্তম যুদ্ধা হয়ে যায় সে এমনিতেই শ্রেষ্ঠতা অর্জন করে। তাই পরিশেষে বলা
যায় মহাভারতে শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা ছিলেন কর্ণ এবং উত্তম যোদ্ধা ছিলেন অর্জুন।
দাতা কর্ণ কে
মহাভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ যোদ্ধা ছিলেন কর্ণ। তাঁর থেকে বড় দাতা ছিলো না কারণ
তিনি নিজের শরীরের অংশ কবচ এবং কুন্ডলী দান করেছিলেন। আরোও একটি তথ্য জেনে নেওয়া
যাক একবার অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করেছিলো মাধব এই সংসারে কি কর্ণ
সবথেকে দানবীর? উত্তরে মাধব বলেছিলেন পার্থ তুমি পরিক্ষা নিতে চাও তাহলে এককাজ
করো একটি সোনার পাহাড়কে একটি গ্রামের সকল ব্যাক্তির মাঝে দান করে দাও এর পরে
অর্জুন তা করতে অনেক সময় ব্যয় করেন কারণ প্রত্যেকে একটি লাইনে দাঁড় করিয়ে ওজন করে
করে বিতরণ করছিলেন।
এবার শেষ হলে একই কাজ কর্ণকে দেওয়া হয় এবং তিনি কিছু অল্প সময়েই তা পালন করে কারণ
তিনি সেই গ্রামের লোকদের ঘোষণা দেন যে যার যতটুকু স্বর্ণের প্রয়োজন এই পাহাড় হতে
নিয়ে যাও। এই ঘটনার পরে অর্জুনও স্বিকার করে কর্ণ মহান দাতা। দাতা কর্ণ ছিলেন
সূর্য পুত্র দৈবিকভাবে কুন্তীয় লাভ করলেও তিনি রথ চালক শুসেন এবং রাধামার কাজে
পালিত হয়। পরবর্তিতে কর্ণের নিজের শক্তি বা সামর্থ্য তিনি অঙ্গ দেশের রাজা হোন।
আমরা যে পৃথিবী ব্যাপি দাতাকর্ণের মহত্ত্বের কথা জানি তিনি মহাভারতের কুন্তীয়
কর্ণ ছিলেন। তাঁর আরো অনেক দানের কথা অপ্রকাশিত রয়েছে আমরা যা জানি সে তুলনায়
কুনচিৎ।
কর্ণের গুরু কে ছিলেন
মহাভারতে কর্ণ জন্মলগ্নে দৈবিক ভাবে হলেও ভাগ্যক্রমে তিনি পালিত হোন মহামহীম
ভীষ্মের রথচালক সুশেনর ঘরে তাঁরা মূলত ছিলো শূত। তাই তাদের শ্রেণি অনুয়ায়ী ধনুক
বিদ্যায় উচ্চ শিক্ষার অনুমতি ছিলো না। কিন্তু এই সমাজ ব্যবস্থার সাথে কর্ণ কোনো
রকম আপোষ না করে সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে ধনুক বিদ্যা অর্জনের জন্য বাহিরে বেরিয়ে
পড়েন। প্রথমে তার দর্শন মিলে নিশাতরাজ ধনুক শিক্ষা প্রদানকারী গুরুর সাথে কিন্তু
কর্ণের যোগ্যতা সিদ্ধিলাভে তিনি সমর্থ ছিলো না তিনি খোঁজ দেন মহাগুরু ঋষি ভরদতায
পুত্র গুরু দ্রোণাচার্যের নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করতে বলেন।
এরপরে কর্ণ গুরু দ্রোণাচার্যের নিকট গিয়ে শিষ্যত্ব চাইলে তাঁকে শূত পুত্র বলে
অপমান করে বিতারিত করে। কারণ ছিলো গুরু দ্রোন কেবল তিনি কৌরবদের ও পান্ডবদের
শিক্ষা প্রদান করবে। এরপরে কর্ণ অপমানিত হয়ে সেখান হতে প্রস্থান করেন এবং
প্রতিজ্ঞা করে যান যে গুরু দ্রোণাচার্যের সকল শিষ্যের চেয়ে অধিক শক্তিশালি ধনুক
ধারী হবেন।
এবং এরপরেই তিনি তাঁর নিজের পরিচয় ত্যাগ করে নতুন ব্রাহ্মণের পরিচয় ধারণ করেন এবং
চলে যান মহাগুর পরশুরামের নিকট। কর্ণের মধ্যে অদম্য আগ্রহ দেখে গুরুপরশুরাম
শিক্ষা প্রদানে রাজি হোন এবং কর্ণ শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। সুতরাং পরিশেষে আমরা বলতে
পারি যে মহাভারতে কর্ণের গুরু ছিলেন পরশুরাম।
মহাভারত সম্পর্কিত শেষ কথা
মহাভারত প্রথম বাংলায় রচনা করেন বেদব্যাস। মহাভাতরের কাহিনী ছিলো দ্বাপর যুগে
সেখানে এক সময় অধর্ম ক্রমশই বৃদ্ধি ঘটলে ধর্মের পাল্লা হালকা হতে থাকে এমতাবস্থায়
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং পূর্ণ অবতার রুপে অবতীর্ণ হোন এবং দুষ্টদের দমন করে
সাধুজনদের রক্ষা করেন। পরিশেষে এই ধর্মীয় আর্টিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট
সেকশানে অবশ্যই ব্যাক্তিগত মতামত জানবেন ভালো লাগলে প্রিয় মানুষদের নিকট পৌঁছে
দেওয়ার অনুরোধ রইলো এবং নিয়মিত ধর্ম তথ্যের আপডেট জানতে এই সাইটে নিয়মিত ভিজিট
করুন। ধন্যবাদ।
Valo
আপনি জীবনে মহাভারত পড়েছেন কি না সন্দেহ । সিরিয়াল দেখে ভাট বকছেন । কর্ণ দ্রোণ, কৃপাচার্য এবং পরশুরাম এই তিন জনেরই কাছে অস্ত্রবিদ্যা নিয়েছিল । আর কর্ণকে শ্রেষ্ঠ বলছেন ? বিরাট যুদ্ধে অর্জুন কর্ণকে তিনবার পরাজিত করেছিলেন । একবার কর্ণ পালিয়ে গিয়েছিলেন । পরের বার অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন! না জানি কি হেতু আপনারা কর্ণের তুলনা অর্জুনের মতো মহান যোদ্ধার সাথে করেন । আপনার সম্পূর্ণ মহাভারত পড়া উচিত ।