গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত - গুরু মন্ত্র জপ করার নিয়ম
সুধি পাঠকবৃন্দ আজ আমরা নিয়মিত ধর্মীয় তথ্য উপস্থাপনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য নিয়ে কথা বলবো আজকের মূল টপিক গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত - গুরু মন্ত্র জপ
করার নিয়ম জানবো। আপনি যদি এখনো সঠিক উচ্চারণ বা সংস্কৃত ভাষায় গুরুর প্রণাম
মন্ত্র সংস্কৃত - গুরুর মন্ত্র জপ করার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেল
আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকেল সম্পন্ন শুর হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে
আপনি খুব সহজেই সংস্কৃত ভাষায় গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত - গুরু মন্ত্র জপ করার
নিয়ম পালন করতে পারবেন।
আমাদের হিন্দু ধর্মালম্বী ভাই বোন সকলেই ধর্ম জ্ঞান খুব জরুরি কারণ আপনি যদি
প্রিতা বা মাতা হোন তাহলে আপনের হাত ধরেই আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠবে তাই আপনি স্বয়ং
নিজে ধর্মজ্ঞান লাভ করুন এবং বাচ্চাদের ছোট থেকেই ধর্মজ্ঞান প্রদান করুন। আজ আপনি
এই আর্টিকেল জুরে গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত নিয়ে কিছু আজানা তথ্য সম্পর্কে
জানতে পারবেন। সুতরাং অধিক কথা আর না বাড়িয়ে চলুন আমরা গুরুর প্রণাম মন্ত্র
সংস্কৃত জানি।
পোস্টের সূচিপত্রঃগুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত - গুরু মন্ত্র জপ করার নিয়ম
গুরু মন্ত্র জপ করার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আজ আমরা জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করাতে সাহায্য করবে এমন গুরুর
মন্ত্র জপ করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানবো। আজকের এই অনুচ্ছেদের মূল
আলোচনায় থাকছে গুরু মন্ত্র জপ করার নিয়ম। আপনিও যদি আপনার জীবনকে সঠিক পথে
পরিচালিত করতে আগ্রহী হোন তাহলে আজকের অনুচ্ছেদে চোখ রাখুন। সুতরাং কথা আর না
বাড়িয়ে চলুন আমরা জেনে নিই গুরু মন্ত্র জপ করার নিয়ম সম্পর্কিত তথ্য।
গুরুর মন্ত্র জপ করার নিয়ম এবং গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত জানা একান্ত একটি
জরুরি বিষয় আপনাকে অবশ্যই সৎ গুরু নিকট দীক্ষা গ্রহণ করা উচিত হবে। কারণ
শ্রাস্ত্রে বর্ণিত রয়েছে যে গুরু হচ্ছে পথ প্রদর্শন করে আপনাকে সঠিক পথে পরিচালিত
করবে এর ফলে আপনি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করতে সক্ষম হবে। আমাদের জন্মের মূল
লক্ষ্যই হচ্ছে মোক্ষলাভ করা পরমাত্মার সাথে মিলন হওয়া। এর পরে যেনো আর জন্ম গ্রহণ
করতে না হয় আমরা ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করতে পাড়ি আর এটি করতে আমাদের সহয়তা করে।
আমাদের সৎ গুরুদেব তাই আমাদের বয়স ৬ বছরের বেশি হলেই সৎ গুরুর নিকট দীক্ষা গ্রহণ
করা উচিত হবে এতে করে সে যেমন সৎ পথে পরিচালিত হবে তেমনি সে জীবনের সঠিক মানে
বুঝতে শিক্ষা লাভ করবে তার জীবন হবে সহজ এবং ধর্মময়। আজকের অনুচ্ছেদের মূল আলোচনা
হচ্ছে গুরুর মন্ত্র জপ করার নিয়ম নিয়ে তা নিম্নোক্ত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা
হলোঃ
- প্রথমে প্রথম প্রহরে ঘুম থেকে উঠুন ( সূর্যদয়ের ৩০ মিনিট পূর্বে) এর পরে হাত পা ধোঁয়ে শুদ্ধ বস্তু পরিধান করুন।
- এরপরে আসুন করুন আপনি চাইলে আপনার মনোযোগ বা একাগ্রতা বৃদ্ধির লক্ষে ঠাকুরের সামনে রেখে আসন করতে পারেন এতে মনোযোগ বাড়ে।
- এরপরে আপনি যদি সৎ গুরুর দ্বারা দীক্ষিত হোন তাহলে আপনার গুরুর দেওয়া বীজমন্ত্রটি জপ করা শুরু করতে পারেন।
- আর আপনি যদি এখনো দীক্ষিত হোননি তাহলে আপনি ওঁ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়ঃ এই মহামন্ত্রটি জপ করতে পারেন। এবং চাইলে গায়ত্রী মন্ত্রটিও জপ করতে পারেন।
- উভয়ে আপনার কল্যাণ হবে।
- জপ করার সময় আপনি দক্ষিণমুখী হয়ে বা পূর্বমুখী হয়ে আসুন করতে পারেন।
- এবার আসন করা হলে প্রথমে গুরুকে প্রণাম নিবেদন করে শান্ত হয়ে এক মনে এক চিন্তায় জপ শুরু করতে পারেন।
- জপ করার সময় আপনি যদি ১০৮ বার করে জপ করতে চান তাহলে কমপক্ষে ৩ বার জপ করুন আর হিসেব রাখতে আপনি রুদ্রাক্ষের মালা, হাতে গুনে,এবং বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি জপ ক্যাউন্টার ব্যবহার করতে পারেন।
- জপ করা শুরু হলে আপনার যতক্ষণ খুশি জপ করতে পারেন এতে ধরা বাধা কোনো নিয়ম নেই কিন্তু কমপক্ষে ১ম জপে ১০৮ বার করে ৩ বার হলে ভালো হয় এতে মনে একাগ্রতা বাড়ে দেহে ধৈর্য্য শক্তি বৃদ্ধি ঘটে।
প্রাতঃকাল আপনার জপ করা শেষ হলে আপনি আত্ম্য কল্যাণ মন্ত্রটি জপ করতে পারেন
নিম্নে আত্ম্য কল্যাণ মন্ত্রটি তুলে ধরা হলোঃ
- ওঁ অসতো মা সদ্ গময়।
- তমসো মা জ্যোতিরর্গময়।
- মৃত্যোর্মাহমৃতং গময়।
- আবিরাবীর্ম এধি।।
বাংলায় অনুবাদঃ হে পরমেশ্বর, তুমি আমাকে অসৎ হতে সৎ পথে পরিচালিত কর। অজ্ঞান হতে
জ্ঞানের পথে পরিচালিত করো এবং মৃত্যুর গ্রাস হতে রক্ষা করে আমাকে অমৃতলোকে নিয়ে
চলো। হে ঈশ্বর তুমি আমার নিকট কৃপা পূর্বক প্রকাশিত হও।
- এভাবে আপনি প্রাতঃকালের জপ প্রক্রিয়া সমাপ্তি করতে পারেন এভাবে দুপুর এবং সন্ধ্যাকালে গুরুর বীজ মন্ত্রটি জপ করতে পারেন।
- এব্যবতিতও আপনি সারাক্ষণ শুদ্ধ স্থানের সারাক্ষণ জপ করতে পারেন এতে আপনার আত্মার কল্যাণতা বৃদ্ধি পাবে।
গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত
প্রিয় পাঠক আজ আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সনাতন ধর্মালম্বীদের নিয়ে আলোচনা করবো।
কারণ আমাদের প্রত্যক ব্যাক্তিই গুরু প্রণাম মন্ত্র জানা একান্ত আবশ্যক। তাই চলুন
আমরা গুরু প্রণাম মন্ত্র সংস্কৃত ভাষায় জেনে নিই। নিম্নবর্গের গুরু প্রণাম মন্ত্র
সংস্কৃত মন্ত্রটি তুলে ধরা হলোঃ
- ওঁ
- গুরুর্ব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণুঃ গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ।
- গুরুরেব পরং ব্রহ্মা তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
অনুবাদঃ শ্রী গুরুদেব ব্রহ্মা, গুরুই বিষ্ণু, গুরুই মহেশ্বর, গুরুই পরমব্রহ্ম
স্বরূপঃ। সেই গুরুদেবকে পুনঃপুনঃ ভক্তিসহকারে প্রণাম করি।
পিতা প্রনাম মন্ত্র
প্রিয় পাঠক আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা আমাদের পরম পূজনীয় পিতা প্রণাম মন্ত্র নিয়ে
আলোচনা করবো। আপনি যদি এখনো পিতার প্রণাম মন্ত্রটি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই
অনুচ্ছেদে চোখ রাখুন এবং খুব সহজেই তা জানুন। চলুন কথা আর বাড়িয়ে আমরা পিতা
প্রণাম মন্ত্র জেনে নিই। নিম্নবর্গের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হলোঃ
- পিতাই স্বর্গঃ পিতাই ধর্মঃ পিতাহি পরমং তপং
- পিতরি প্রীতিমাপর্ন্নে প্রিয়ন্তে স্বর্ব্ব দেবতায় নমঃ
মায়ের প্রনাম মন্ত্র
প্রিয় পাঠক আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা আমাদের পরম পূজনীয় মায়ের প্রনাম মন্ত্র
নিয়ে আলোচনা করবো। আপনি যদি এখনো মায়ের প্রনাম মন্ত্র না জেনে থাকেন তাহলে আজকের
এই অনুচ্ছেদে চোখ রাখুন এবং খুব সহজেই তা জানুন। চলুন কথা আর বাড়িয়ে আমরা মায়ের
প্রনাম মন্ত্রটি জেনে নিই। নিম্নবর্গের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হলোঃ
- মাতা ধরিত্রী জননী দয়া ব্রম্মময়ী সতী।
- দেবী তু রমনী শ্রেষ্ঠা নির্দ্দোষা্ সর্ব দুঃখ হারা।।
- আরাধ্যা পরমা মায়া তুষ্টিশান্তিঃ ক্ষমা গতিঃ।
- স্বাহাস্বাধা চ গৌরীমাঃ পদ্ম চ বিজয়াজয়াঃ নমঃ নমঃ।।
পতি প্রণাম মন্ত্র
প্রিয় পাঠক আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা আমাদের পরম পূজনীয় পতি প্রণাম মন্ত্র নিয়ে
আলোচনা করবো। আপনি যদি এখনো পতি প্রণাম মন্ত্রটি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই
অনুচ্ছেদে চোখ রাখুন এবং খুব সহজেই তা জানুন। চলুন কথা আর বাড়িয়ে আমরা পতি প্রণাম
মন্ত্র জেনে নিই। নিম্নবর্গের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হলোঃ
- ওঁ ইহৈব স্তং মা বি যৌষ্টং বিশ্বমাযুর্ব্যশ্নুতম্।
- ক্রীড়ান্তৌ পুত্রৈর্ন প্ত্ভির্মোদমানৌ স্বস্তকৌ।। (অথর্ববেদঃ ১৪/১/২২)
বাংলায় অনুবাদঃ হে দম্পতি আমরা উভয়ে যেনো এক সঙ্গে থাকি। কখনোই পৃথক যেনো না
হয়। নিজের সন্তানদের নিয়ে যেনো হাসিয়া খেলিয়া পূন্য আয়ু ভোগ করতে পারি।
উপসংহার
পরিশেষে আমরা উপরিউক্ত আলোচনা হতে শিক্ষা লাভ করতে পারি গুরুর প্রণাম মন্ত্র
এবং জপ করার সঠিক নিয়ম কানুন কতবার জপ করবো কিভাবে করবো তা নিয়েই বিস্তারিত
আলোচনা জানলাম সাথে আমাদের পরম পূজনীয় পিতামাতার প্রণাম মন্ত্র এবং নব বধূর
পতিপরমেশ্বরে প্রণাম মন্ত্র সম্পর্কে জানলাম। এখন আমাদের সকলের উচিত হবে আমাদের
বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ঘটানো। কারণ কেবল জেনে বসে থাকলে চলবে না তার প্রয়োগ
ঘটাতে হবে। শেষে একটি কথা আর্টিকেলটি যদি আপনার আজানা তথ্য সম্পর্কে সামান্যতম
শিক্ষা দিতে সামর্থ্য হয় তাহলে অন্যদের নিকট সিয়ার করার অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url